বেঙ্গালুরু: রামমন্দিরের শিলান্যাসের দিনই হিন্দুত্ববাদী শক্তির পক্ষে জোরদার সওয়াল করলেন বেঙ্গালুরু দক্ষিণের বিজেপি সাংসদ তেজস্বি সূর্য। রাষ্ট্রশক্তির রাশ হিন্দুত্ববাদী শক্তির হাতে থাকা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।


গতকাল সমস্ত ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান অক্ষরে অক্ষরে পালন করে অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজো ও শিলান্যাস করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেদিনই হিন্দুত্বের পক্ষে টুইট করেছেন তেজস্বি। টুইটে লিখেছেন, ‘ধর্ম রক্ষার জন্য হিন্দুত্ববাদী শক্তির রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা জরুরি। যখনই আমরা রাষ্ট্রক্ষমতা হারিয়েছিতখনই আমরা মন্দির থেকে দূরে চলে গিয়েছি। ২০১৪ সালে ২৮২ আসন২০১৯ সালে ৩০৩ আসন জয় মোদির জন্যই সম্ভব হয়েছে।


মোদি ও হিন্দুত্বের পক্ষে এই জয়গান একজন সাংসদের পক্ষে সমীচিন নয় বলেই মনে করছেন কর্নাটক হাইকোর্টের প্রাক্তন সরকারি আইনজীবী বি টি ভেঙ্কটেশ। তিনি বলেন, ‘ এই ধরনের মন্তব্য সূর্যের বক্তব্যসংবিধানের ভাবধারার বিরোধী। সংবিধানের উল্লেখিত তত্ত্বপ্রাথমিক দায়িত্বমূল্যবোধের পরিপন্থী।ভেঙ্কটেশ মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। প্রত্যেক প্রতিনিধিকে দেশের একতা বজায় রাখার জন্য কাজ করে যেতে হবে। তেজস্বির মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেনবেঙ্গালুরু এক সমাজকর্মী তথা আইনজীবী লিও সালদানহা। তাঁর মতেএ ধরনের বক্তব্যে  সংবিধানের পবিত্রতা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন এক বিজেপি সাংসদ। একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে তেজস্বির উচিত সংবিধানের মূল্যবোধ তুলে ধরা। সালদানহা রাষ্চ্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুর কাছে তেজস্বিকে সাসপেন্ড করার দাবি জানিয়েছেন। একাধিক সংগঠনও এই ধরনের মন্তব্যের জন্য সাংসদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। শিবাজিনগরের বিধায়ক রিজওয়ান আরশাদের কথায়, ‘তেজস্বির এই মন্তব্য ঘৃণা এবং অস্থিরতা ছড়াবে। আপনাদের এই ধরনের রাজনীতি কারও ভাল করতে পারে না।


তবে বিতর্ক যতই বাড়ুকনিজের অবস্থান থেকে পিছু হটেননি সূর্য। রামমন্দিরের শিলান্যাসের পরে ফের ট্যুইট করেন তিনি। সেখানেও এক সুর ছিল। তিনি লেখেন, ‘মন্ত্র উচ্চারণের সঙ্গে পুরোহিত ভারত মাতার জন্য জয়ধ্বনি দিয়েছেন। এটাই ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ। ধর্ম বাঁচলেতবে রাষ্ট্র বাঁচবে।


বিতর্কিত মন্তব্য এর আগেও করেছেন তেজস্বি।  সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে ২০১৯ সালে একটি বিরোধী মিছিল নিয়ে  তিনি কটাক্ষ করেছিলেন, ‘ যারা নাগরিকত্ব আইনের রিবোধিতা করছে তারা অশিক্ষিত।’