সেনা জানাচ্ছে, কাঁধের কালাশনিকভ নামিয়ে গুলি ছোঁড়ার বদলে সবজার অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ ছিল আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে স্মার্টফোনে নানা পোজে ছবি তুলতে। শনিবার যখন ত্রালের পুলওয়ামা জেলায় তাকে ঘিরে ফেলা হয়, তখন প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে অপারেশন চললেও সবজার একটা গুলিও ছোঁড়েনি। বরং প্রাণে বাঁচতে মরিয়া জঙ্গি পান্ডা একের পর এক টেক্সট মেসেজ পাঠাচ্ছিল, যাতে পাথরবাজদের জড়ো করে সেনার ওপর পাথর ছোঁড়া শুরু করা যায়, সেই সুযোগে পালাতে পারে সে।
সেনা জানতে পারে, সবজার ও ফয়জান নামে আর এক জঙ্গি ত্রালের সাইমু গ্রামে ঘাঁটি গেড়েছে। শুক্রবার সন্ধেয় বাড়িটি ঘিরে ফেলে সেনা, স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও রাজ্য পুলিশ। প্রথমে তারা সবজার ও ফয়জানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু জঙ্গিরা একটা গুলিও ছোঁড়েনি, ফলে সেনা সন্দেহ করে, তারা নিজেদের অবস্থান গোপন করে পালানোর চেষ্টা করছে।
তখন তাদের ঘাঁটি থেকে বার করতে ভেতরে হোসপাইপ দিয়ে পেট্রোল ছিটোতে থাকে সেনা। গোটা সময়টা সবজার চেষ্টা করছিল, এসএমএস করে পাথরবাজদের জড়ো করতে কিন্তু গভীর রাত হওয়ায় পাথরবাজরা ঘটনাস্থলে আসতে পারেনি। ততক্ষণে একতলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, তারপর দোতলায়। সকাল সোয়া আটটা নাগাদ যখন তিনতলায় সেনা পেট্রোল ছেটানো শুরু করে, তখন দুই জঙ্গি দৌড়ে বেরিয়ে এসে ব্যূহ ভেঙে পালাতে চেষ্টা করে। একটাও গুলি চালানোর আগেই সবজার সেনার গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায়। কয়েক সেকেন্ডে খতম হয়ে যায় দুজনে।
সেনা জানিয়েছে, ক্লাস সেভেনে পড়তে পড়তে লেখাপড়া ছেড়ে দেওয়া সবজারের মহিলাদের প্রতি তুমুল দুর্বলতা ছিল। নিষিদ্ধ মাদকও নিত সে। গত বছর বুহান ওয়ানির মৃত্যুর পর সে তার জায়গা দখল করে। সূত্রের খবর, এই সব কাশ্মীরী জঙ্গিরা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারে ভর করে নিজেদের নায়কোচিত ভাবমূর্তি তৈরি করে, অস্ত্রশস্ত্র হাতে নিয়মিত পোস্ট করে নিজেদের ছবি। এতে তাদের কাছে অনায়াসে পৌঁছে যায় নিরাপত্তা বাহিনী।
এভাবে আঞ্চলিক জঙ্গিদের তুলে আনা পাকিস্তানের কাশ্মীরে ছায়া যুদ্ধের অন্যতম স্ট্র্যাটেজি। মুখোমুখি লড়াইয়ে এদের কোনও অভিজ্ঞতা নেই। শুধু উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদ জিইয়ে রাখার জন্য বলির পাঁঠা হিসেবে এদের ব্যবহার করে পাকিস্তান।