পাঁচকুলা: জেলবন্দি ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান গুরমীত রাম রহিমের ছায়াসঙ্গিনী হনিপ্রীত ইনসানকে আগামী ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠাল পাঁচকুলার একটি আদালত।


৯-দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর এদিন কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে নিজেকে রাম রহিমের দত্তক কন্যা বলে দাবি করা হনিপ্রীত ওরফে প্রিয়ঙ্কা তানেজা ও তাঁর সহযোগী সুখদীপ কৌরকে আদালতে পেশ করা হয়।


দুপক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর হনিপ্রীত ও সুখদীপকে ১০ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়ে দেন মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট রোহিত ওয়াটস। জানা গিয়েছে, দুজনকেই অম্বালা কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রাখা হবে।


এদিন আদালতে সরকারপক্ষের আইনজীবী জানান, তাঁদের হাতে হনিপ্রীতের মোবাইল ফোন রয়েছে। তিনি যোগ করেন, সিরসা ও পাঁচকুলা হিংসার ঘটনায় সংক্রান্তে ৩৬ বছরের হনিপ্রীত পুলিশকে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও প্রমাণ তুলে দিয়েছেন।


জোড়া ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে রাম রহিম জেলে যেতেই আচমকা গায়েব হয়ে যান হনিপ্রীত। তাঁর খোঁজে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং একইসঙ্গে নেপাল-সীমান্তেও তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু, খোঁজ মেলেনি তাঁর। তাঁর নাম ৪৩ জন ওয়ান্টেড তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।


জারি করা হয় লুকআউট নোটিস। পরবর্তীকালে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয় তাঁর নামে। অবশেষে ৩৮ দিন পর, গত ৩ অক্টোবর পঞ্জাবের জিকাপুর-পাতিয়ালা রোড থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।


গত ২৫ অগাস্ট, জোড়া ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর পাঁচকুলা, সিরসা সহ হরিয়ানা ও দিল্লির বিস্তীর্ণ এলাকায় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। তাতে ৪১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন পাঁচ শতাধিক মানুষ।


অভিযোগ, ডেরার কয়েকজন নেতানেত্রীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেই হিংসার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেন হনিপ্রীত। আদালতে পুলিশ দাবি করে, হনিপ্রীত জেরার মুখে জানিয়েছেন, হিংসা ছড়াতে ডেরা সমর্থকদের ১.২৫ কোটি টাকা দেন তিনি।


এদিকে, হিংসার ঘটনায় এদিন হরিয়ানা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) সামনে হাজিরা দেন ডেরার চেয়ারপার্সন বিপাসনা ইনসান। গতকাল তাঁকে তলব করেছিল পাঁচকুলা পুলিশ।


কিন্তু, তিনি অসুস্থতা দাবি করে আসেননি। এদিন সিরসার হাসপাতালে তার শারীরিক পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, তিনি সুস্থ। এরপরই সিরসা থেকে পুলিশের সামনে হাজিরা দেন বিপাসনা।