নয়াদিল্লি: আজ ও আগামীকাল শিবরাত্রি। মন্দিরে মন্দিরে পূণ্যার্থীদের ভিড় শিবরাত্রির চেনা ছবি। তাঁরা শিবের মাথায় জল ঢেলে পালন করবেন শিবরাত্রি। হিন্দু ধর্মগ্রন্থে শিবরাত্রির রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কেন শিবরাত্রি পালন করা হয়?
শিবরাত্রি হিন্দুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উত্সব। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, শিবরাত্রির দিনেই শিবের সঙ্গে পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল। শিবরাত্রি ফাল্গুন কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথিতে পালন করা হয়। ১৩ জানুয়ারি সারা দিন ত্রয়োদশী তিথি। মধ্যরাত ১১.৩৫ টায় চতুর্দশী তিথি শুরু হবে। তিথি অনুসারে আজ ও কাল শিবরাত্রি পালন করা যাবে। বলা হয়, উত্তর গোলার্ধের আকাশে এই দিনটিতে গ্রহ-নক্ষত্রের সংস্থান এমন হয়, যাতে মানুষ তার আধ্যাত্মিক এবং অন্যান্য শক্তি বিশেষ ভাবে জাগ্রত করে তুলতে পারে। শিব নিজে নাকি উমাকে বলেছিলেন, এই তিথি পালন করলে সমস্ত পাপের ফল থেকে নিষ্কৃতি মিলবে এবং মোক্ষলাভ হবে। অনেকের বিশ্বাস, শিবরাত্রিতে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র ইত্যাদি পাঠ করলে সত্যি সত্যিই শক্তি বাড়ে।
শিবরাত্রির অর্থ?

শাস্ত্র অনুসারে, শিবরাত্রির অর্থ হল মহা কল্যাণকারী রাত্রি। শিবের অর্থ কল্যাণ এবং তিথিগুলির মধ্যে চতুর্দশীর অধিপতি শিব। শাস্ত্র অনুসারে, এর গুরুত্ব অপরিসীম। এই গুরুত্বের কারণেই ফাল্গুনের কৃষ্ণ চতুর্দশীতে মহা শিবরাত্রির ব্রত পালন করা হয়। শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের সঙ্গে যাঁরা ব্রত পালন করেন, জপ, ধ্যান ও সাধনা করেন তারা ভগবান শিবের কৃপা লাভ করেন।
মনস্কামনা কীভাবে পূরণ হয়?

এর অর্থ এমন নয় যে, ব্রতধারীরা যা চাইবেন, তাই-ই পেয়ে যাবেন। শাস্ত্র অনুসারে, যতক্ষণ না কেউ গভীর ধ্যান সাধনায় মগ্ন হতে পারেন, ততক্ষণ মনের ইচ্ছা পূরণ হয় না। এজন্য সাধনার প্রয়োজন। ভগবান শিবের পুজোয় আর কিছু হোক বা না হোক, ধ্যানঅত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গে প্রয়োজন ওঁ সাধনা। ওঁ জপ করলে নাদ স্বরের উত্পত্তি হয়। শিবরাত্রির দিনে ভক্তদের শিব ও পার্বতীকে স্মরণ করতে হয়। কারণ, এই রাত সৃষ্টি শুরুর প্রারম্ভিক রাত। এখান থেকেই সৃষ্টির উদয় শুরু।শিবরাত্রির রাত দীক্ষা, সাধনা ও গুরুমন্ত্রের রাত, কঠোর ব্রত পালনের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির রাত।
কীভাবে শিবলিঙ্গের পুজো করবেন?
শাস্ত্র অনুসারে, স্ফটিকের শিবলিঙ্গের অভিষেকে ধন ও যশের অভাব দূর হয়। তাই স্ফটিকের শিবলিঙ্গ স্থাপন করুন। তিন চার ঘন্টা বসে ওঁ নম শিবায় মন্ত্র জপ করুন। এরপর অন্ন, ফল, জল, ঘি, ভস্ম ও দুধ দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করুন। যোগ ও সাধনার সংমিশ্রণে বাঞ্ছিত ফল পাওযা যায়।
গঙ্গা জলে শিবলিঙ্গকে স্নান করিয়ে চন্দন লাগান। সঙ্গে ফুল ও বেলপাতা অর্পণ করুন। এরপর ধূপ ও দীপ জ্বেলে আরতি করুন। বাড়িতেও শিবলিঙ্গ স্থাপন করতে পারেন। শিবলিঙ্গে যোনি নালি উত্তর দিকে রাখুন এবং অভিষেকের সময় নিজের মুখও উত্তর দিকে রাখুন।