নয়াদিল্লি: নোট ইস্যুতে কার্যত ভণ্ডুল হওয়া সংসদের গোটা শীতকালীন অধিবেশন নিয়ে ক্রুদ্ধ ও ব্যথিত লালকৃষ্ণ আডবাণী বৃহস্পতিবার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন।
গত ১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে শীতকালীন অধিবেশন। শেষ হচ্ছে আগামীকাল। কিন্তু, প্রথম দিন থেকেই কেন্দ্রের নোট বাতিল ইস্যুতে কার্যচ অচল হয়ে পড়ে সংসদের উভয় কক্ষই। বিরোধী ও শাসক পক্ষের হই-হট্টগোলের মধ্যে প্রতিদিনই দফায় দফায় মুলতুবি করতে হয় সভাকে। গতকালই চলতি অধিবেশনে প্রথম কোনও বিল পাশ হয় সংসদে।
এমতাবস্থায় এদিন ক্ষুব্ধ আডবাণী জানান, নোট বাতিল ইস্যুতে কার্যত সংসদের একটা গোটা অধিবেশন ভেস্তে যাচ্ছে দেখাটা সত্যিই বেদনাদায়ক। তিনি বলেন, কোনও আলোচনা ছাড়াই যদি গোটা অধিবেশন শেষ হয়ে যায়, তাহলে তা সংসদের হার।
এদিন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন লোকসভার অধিবেশন মুলতুবির ঘোষণা করতেই উষ্মা প্রকাশ করেন এই প্রবীণ বিজেপি নেতা। প্রথম সারিতে বসেছিলেন আডবাণী। তাঁকে দেখা যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে কাছে পেয়ে নিজের ক্ষোভের কথা জানান। দেখা যায়, স্মৃতিকে তখন পাশে থাকা রাজনাথ সিংহকে ডেকে নিতে দেখা যায়।
এবার রাজনাথকে নিজের উষ্মাপ্রকাশ করেন আডবাণী। রাজনাথকে দেখা যায়, বাধ্য ছাত্রের মতো প্রবীণ নেতার কথা মনোযোগ সহকারে শুনতে। জানা গিয়েছে, রাজনাথকে তিনি জানান, আগামীকাল নোট ইস্যুতে আলোচনা চালাতে স্পিকারকে অনুরোধ করতে। তবে, রাজনাথ কোনও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখাননি।
পরে, তৃণমূলের ইদ্রিশ আলি ও বিজেপির নানা পাটোলেকে আডবাণী বলেন, যদি কোনও আলোচনা ছাড়া সংসদে অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হয়ে যায়, তাহলে তা ওয়াশআউট হিসেবে ধরতে হবে।
প্রথম এনডিএ জমানার উপ-প্রধানমন্ত্রী থাকা আডবাণী এদিন জানান, বিরোধী দল, বিশেষ করে কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলা উচিত সরকার-পক্ষের যাতে শেষদিন সংসদে নোট-ইস্যুতে আলোচনা সম্ভব হয়।
তাঁর মতে, ধারা বড় কথা নয়। আলোচনা হওয়াটা জরুরি। তিনি মনে করেন, বিষয়টিকে কোনও পক্ষের উচিত নয় হার বা জয় হিসেবে দেখার। আডবাণী জানান, আলোচনা ছাড়া মুলতুবি হলে, তা সংসদের হার হিসেবেই ধরা হবে।
এই প্রথম নয়। এর আগেও একবার আডবাণী তাঁর ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন। গত ৭ ডিসেম্বর সভা মুলতুবি হওয়ার পরই এই প্রবীণ নেতা অভিযোগ করেছিলেন, সরকারপক্ষ, বা বিরোধীপক্ষ – কেউই সংসদ সচল রাখার চেষ্টা করছে না। এমনকী, স্পিকারও নিজের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করছেন না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।