নয়াদিল্লি: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির জেরে ডিউটি করতে গিয়ে পাক বাহিনীর বুলেট, মর্টারের ঘায়ে প্রাণ দিতে হয়েছে বটে, কিন্তু সীমান্তে অনেক বেশি জওয়ান মারা গিয়েছেন হার্ট অ্যাটাকে, আরও নানা ধরনের অসুখ-বিসুখে। সরকারি তথ্যেই প্রকাশ, গত ২ বছরে পাকিস্তানি হানাদারদের রোখা, মাওবাদী দমনের চেয়ে নানা রোগ-ব্যারাম, শারীরিক সমস্যায় বেশি জওয়ানকে হারিয়েছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী।


২০১৫-র জানুয়ারি থেকে ২০১৬-র সেপ্টেম্বরের মধ্যে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীতে যে ৭৭৪টি মৃত্যু ঘটেছে, তার মাত্র ২৫ শতাংশ হয়েছে শত্রুর মোকাবিলা করতে গিয়ে। সীমান্তে ডিউটিরত অবস্থায় মারা গিয়েছেন মাত্র ২৫ জন জওয়ান, ৩১৬ জনের মৃত্যুর কারণ নানা ধরনের রোগ, অসুস্থতা, ১১৭ জনের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটেছে।


সরকারি পরিসংখ্যানে আরও দেখা যাচ্ছে, ২০১৫-র জানুয়ারি থেকে এ বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এইটআইভি-এইডস, ম্যালেরিয়ায় সীমান্তরক্ষী জওয়ানদের মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, কিন্তু রেল, পথ দুর্ঘটনা বা বাইক দুর্ঘটনায় আধাসামরিক জওয়ানদের প্রাণহানি অব্যাহত রয়েছে। এটা তাঁদের কাছে ‘উদ্বেগের বিষয়’ বলে জানিয়েছেন বাহিনীর পদস্থ অফিসাররা। তথ্যে প্রকাশ, ১৯২টি মৃত্যু ঘটেছে পথ বা রেল দুর্ঘটনায়। ১৮ জন জওয়ান এইচআইভি-এইডস-এ, ক্যান্সার ও ম্যালেরিয়ায় যথাক্রমে ৩৮ ও ৫ জন জওয়ান মারা গিয়েছেন।


জনৈক কর্তা বলেছেন, এটা তাঁদের ভাবাচ্ছে। সংখ্যাটা কমিয়ে আনতে হবে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানদের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনশৈলী ও নিরাপদে যানবাহন চলাচলের অভ্যাস তৈরি করতে বেশ কিছু ব্যবস্থা করা হচ্ছে।


গত বছরই প্রাক্তন বিএসএফ ডিরেক্টর ডি কে পাঠক জানিয়েছিলেন, প্রায় আড়াই লক্ষ জওয়ানকে নিয়ে তৈরি বাহিনী সাম্প্রতিককালে এক বিপজ্জনক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তা হল, সীমান্তে পাহারা দিতে গিয়ে শত্রুর হামলায় যত না জওয়ানের মৃত্যু হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি জওয়ান মরছেন ডিউটিতে না থাকাকালে, বাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে।