রামগড় (ঝাড়খন্ড): 'গোরক্ষকদের' মারে খুনের মামলায় ঝাড়খন্ডের নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত ১১ অভিযুক্তের সবাই। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) ধারায় তারা অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছে। এছাড়া, তাদের তিনজন ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ বি (ষড়যন্ত্র) ধারায়ও দোষী সাব্যস্ত হয়েছে, যা থেকে পরিষ্কার, আদালত নিশ্চিত যে, পূর্বপরিকল্পনা মাফিক ওই হামলা করা হয়েছিল।
বলা হচ্ছে, গোরক্ষার নামে বাড়াবাড়ি, গোপাচারকারী সন্দেহে হত্যার মামলায় এই প্রথম দেশে কোনও দোষী ঘোষণার রায় বেরল। ২০ মার্চ সাজা ঘোষণা হবে।
অপরাধী সাব্যস্ত লোকজনের আইনজীবীরা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন।
গত বছরের ২৯ জুন রামগড়ে মারমুখী জনতার পিটুনিতে মারা যান আলিমুদ্দিন ওরফে আসগর আনসারি নামে একজন। তাঁর কাছে গোমাংস ছিল, এই সন্দেহে আসগরকে মারধর করা হয়। ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় বিস্তর শোরগোল হয়। যেদিন গোরক্ষার নামে বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে নীরবতা ভেঙে প্রথম সরব হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ঘটনাটি সেদিনেরই।
আসগরের ভ্যানে ২০০ কেজি মাংস ছিল। তাঁর গাড়িতেও আগুন ধরানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে, জখম আসগরকে হাসপাতালে পাঠিয়েও বাঁচানো যায়নি। নিত্যানন্দ মাহাতো নামে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা সহ ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। আরেক অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করেন।
আসগরের স্ত্রী মরিয়ম খাতুন সে সময় মিডিয়ার কাছে দাবি করেছিলেন, তিনি নিশ্চিত, বজরং দলের লোকজনই তাঁর স্বামীর হত্যায় দায়ী।
মামলাটি নিয়ে শোরগোল হয়েছিল গত বছরের অক্টোবরেও। আদালতে আসার পথে স্ত্রী দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ায় সাক্ষ্য দিতে পারেননি আসগর হত্যার এক প্রত্যক্ষদর্শী। একটি জাতীয় স্তরের সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আসগরের হত্যা মামলার প্রত্যক্ষদর্শী, তাঁর ভাই জলিল আনসারি আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেন, কিন্তু নিজের পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে ভুলে গিয়েছিলেন। স্ত্রী জুলেখা ও আলিমুদ্দিনের ছেলে শাহজাদ আনসারিকে বাড়ি থেকে পরিচয়পত্রটি নিয়ে আসতে বলেন জলিল। কিন্তু তাঁরা সেটি নিয়ে আসার সময় রাস্তায় তাঁদের বাইকটিকে ধাক্কা মারে আরেক অচেনা লোকের বাইক। মারা যান জুলেখা। আসগরের স্ত্রী মরিয়ম সে সময়ই ওই দুর্ঘটনার পিছনে রহস্য আছে বলে দাবি করেছিলেন।