নয়াদিল্লি:  সিবিএসই প্রশ্নফাঁসকাণ্ডে গ্রেফতার আরও তিন। দ্বাদশ শ্রেণির অর্থনীতির প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে ওই তিন ব্যক্তির সরাসরি যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, দাবি দিল্লি পুলিশের ক্রাইমব্রাঞ্চের তদন্তকারী আধিকারিকদের। আজ যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে একজন অর্থনীতির শিক্ষক। সেই ব্যক্তি নিজে একটি কোচিং সেন্টারও চালান। এছাড়া আরও যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে একজন ফিজিক্স এবং অপরজন অঙ্কের শিক্ষক। দুজনেই একটি কনভেন্ট স্কুলে পড়ান। প্রশ্নপত্রগুলি হাতে পেতে ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে দু থেকে আড়াই হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। তদন্তে নেমে আধিকারিকরা জানতে পারে পড়ুয়াদের থেকে নেওয়া টাকার ৫০ শতাংশ চলে যেত শিক্ষকদের কাছে।


এদিকে যে ব্যক্তি সিবিএসইকে দশম শ্রেণির অঙ্ক পরীক্ষার আগের রাতে সতর্ক করে প্রশ্নফাঁসের ব্যাপারে, তাকেও চিহ্নিত করেছে পুলিশ। সে হল দশম শ্রেণির এক পড়ুয়া। ঘটনার তদন্তে আরও গভীরে যেতে গুগল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করে পুলিশ। বিভিন্ন ইমেল কোথা থেকে এসেছে, সেই আইপি অ্যাড্রেসের সন্ধান পেতেই গুগলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা পুলিশের।

একনজরে দেখে নেব সিবিএসই প্রশ্নফাঁসকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ঠিক কী কী হল

বাওয়ানা কোচিং সেন্টারের মালিক তৌকিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের জালে ধরা পড়েছে আরও যে দুজন শিক্ষক তাঁদের মধ্যে একজনের নাম রিশব, অপরজন রোহিত। অভিযুক্ত ব্যক্তিরাই গত ২৬ মার্চ অর্থনীতির পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টা আগে প্রশ্নফাঁস করে দেন।

পুলিশের দাবি, ওই দুই শিক্ষক সকাল ৮ বেজে ১৫ মিনিটে প্রশ্নপত্র খুলে, লিখে দেন। এরপর সেই উত্তর লেখা প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে ওই কোচিং সেন্টারের মালিকের কাছে পাঠায় ওই দুই শিক্ষক। তারপর সেখান থেকে ভাইরাল হয়ে যায় প্রশ্নপত্র। পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৯ বেজে ৪৫ মিনিটে।

এদিকে সিবিএসই দশম শ্রেণির যে পড়ুয়া অঙ্কের প্রশ্নপত্র বোর্ড প্রধান অনিতা কারওয়ালকে মেল করে পাঠায়, তাকে ও তার বাবাকে চিহ্নিত করেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, দশম শ্রেণির ওই পড়ুয়া প্রশ্নপত্রটি হোয়াটসঅ্যাপে পায়। তারপর সে সেই প্রশ্নপত্রটি তার বাবার ইমেল থেকে বোর্ড প্রধানকে পাঠিয়ে দেয়। এই ঘটনায় দিল্লি পুলিশের ক্রাইমব্রাঞ্চ রাজধানী ছাড়াও এনসিআর-এর আরও পাঁচ জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ৫৩ জন পড়ুয়া এবং ৯ জন শিক্ষককে জেরা করেছে পুলিশ। এদিকে বোর্ডের এক কর্মীও পুলিশের নজরে রয়েছে। প্রসঙ্গত, এখন দিল্লি ক্রাইমব্রাঞ্চ সেই সূত্রের সন্ধানে রয়েছে, যেখান থেকে প্রথম সিবিএসই-র কাছে খবর আসে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।

আজ দুপুরে গ্রেফতার তিন অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করবে পুলিশ।