মস্কো: পূর্ব লাদাখে ভারত-চীন সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে গত কয়েক মাস ধরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে তো চড়ছেই। আর এর মধ্যেই মস্কোয় দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলোচনায় বসলেন। দুই ঘন্টার এই বৈঠকে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনের ওপরই গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বৈঠকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ পূর্ব লাদাখে স্থিতাবস্থা ও সৈন্য দ্রুত হ্রাসের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বৈঠকে রাজনাথ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, চিন আগ্রাসী নীতি ছাড়লে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় শান্তি বজায় থাকতে পারে। উল্লেখ্য, চিনের আগ্রহেই এই বৈঠক হয়।


জানা গেছে, রাশিয়ায় মনোযোগ বেশি পেয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। উভয় দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মস্কোয় উপস্থিত হয়েছিলেন সাংহাই কর্পোরেশন (এসসিও) সম্মেলনের জন্য। তারই এক ফাঁকে মস্কোর এক নামী হোটেলে প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়েই ফেংঘের সঙ্গে বৈঠক করেন  রাজনাথ সিং।

রাজনাথের মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ট্যুইট করে জানানো হয়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেংঘের সঙ্গে মস্কোয় বৈঠক শেষ হয়েছে। এই বৈঠক প্রায় দুই ঘন্টা ২০ মিনিট ধরে চলে।
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর একটি প্রথমসারির হোটেলে ভারতীয় সময় অনুসারে রাত সাড়ে নয়টায় বৈঠক শুরু হয়। ভারতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রতিরক্ষা সচিব অজয় কুমার ও রাশিয়ায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত ভেঙ্কটেশ বর্মা।
জানা গেছে, ভারতীয় প্রতিনিধি দল প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ পারে স্থিতাবস্থা বদলে চিনের সেনার চেষ্টার ব্যাপারে তীব্র আপত্তি জানানো হয়। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অচলাবস্থার সমাধানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অচলাবস্থা নিরসনের ওপরই গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এরইমধ্যে রাজনাথ বলেছেন, আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বিশ্বাসের আবহ, আন্তর্জাতিক নিয়মের প্রতি মর্যাদা এবং মতভেদের ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, পূর্ব লাদাখ এলাকায় বেশ কিছু স্থানে ভারত ও চিনের মধ্যে গত চার মাস ধরে অচলাবস্থা চলছে। পাঁচদিন আগে চিন প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ তীরবর্তী এলাকায় ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালায়। এর ফলে উত্তেজনার পারদ আরও চড়েছে।
পূর্ব লাদাখের সীমান্তে উত্তেজনার পর দুই দেশের মধ্যে প্রথমবার উচ্চস্তরীয় বৈঠক হল। এর আগে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল অচলাবস্থা দূর করতে চিনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। এবার বিদেশমন্ত্রী আগামী সপ্তাহে এসসিও-র বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে রাশিয়া যেতে পারেন।