নয়াদিল্লি: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-তে ফের উত্তেজনা।  ভারত ও চিনের সেনাদের মধ্যে ফের হাতাহাতির ঘটনা সামনে এল। তিন দিন আগে উত্তর সিকিমের নাকু লায়  চিনের সেনাদের সঙ্গে ভারতের সেনাদের এই সংঘাত বেধেছিল বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় চিনের বেশ কয়েকজন সেনা জখম হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে সেনার পক্ষ থেকে সরকারিভাবে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি। এলএসি-তে উত্তেজনা প্রশমন নিয়ে গতকালই ভারত ও চিনের মধ্যে কোর কমান্ডারদের মধ্যে ১৭ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠক হয়েছে।


জানা গিয়েছে, তিন দিন আগে ভারতের সীমানার দিকে ঢোকার চেষ্টা করে চিনা ফৌজ। কিন্তু সেখানে মোতায়েন ভারতীয় জওয়ানরা তাদের সেই চেষ্টা ভেস্তে দেয়। ওই এলাকা থেকে তাদের তাড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনা।

এই ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সূত্রের খবর, ১৭-২০ জন চিনা সেনা জখম হয়। সূত্রের খবর, ভারতের চার জওয়ানও আহত হয়েছেন।

সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হয়ে বৈঠক গভীর রাত আড়াইটেয় শেষ হয়। চিন বলাতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ভারতের পক্ষে লে-র ১৪ তম কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল পিজেকে মেনন কথাবার্তা বলছেন। চিনের বিএমপি হাট মলডোতে এই বৈঠকে কোনও কিছু সমাধান সূত্র বেরিয়েছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি। তবে বৈঠকের উদ্দেশ্য সীমান্তে উত্তেজনা হ্রাস ও সেনা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০-র  ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায়  ভারত ও চিনের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছিল। এই ঘটনায় ভারতের ২০ জন জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। চিনেরও অনেক সৈন্য হতাহত হয়েছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে চিনের পক্ষ থেকে কোনও কিছু জানানো হয়নি।  চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এলএসি-তে দ্বিতীয়বার শিবির তৈরি করেছিল। এতে আপত্তি জানাতে কর্নেল সন্তোষ বাবু ৪০ জওয়ানকে নিয়ে প্রতিপক্ষে শিবিরে গিয়েছিলেন। এই সংঘর্ষের ঘটনায় শহিদ জওয়ানদের মধ্যে কমান্ডিং অফিসার বি সন্তোষ বাবু সহ ১২ জওয়ান ছিলেন ১৬ বিহার রেজিমেন্টের।

এরপর ২০২০-এর  ২৯-৩০ অগাস্ট প্যাংগং স্নো লেকের দক্ষিণে ভারত ও চিনের সেনাদের মধ্যে সংঘাত হয়েছিল। ৩১ অগাস্ট এই বিবাদে নিষ্পত্তি ঘটাতে চুসুলে দুই পক্ষের আলোচনা হয়। এই ঘটনা ফিঙ্গার এরিয়া (প্যাংগং স্নো)-র উল্টোদিকে হয়েছিল। এই এলাকায় এ ধরনের সংঘাত ছিল সেই প্রথম। ভারত চিনকে মুখের মতো জবাব দিয়েছিল। ওই সংঘর্ষে অবশ্য ভারতের কোনও জওয়ান হতাহত হননি।

চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস-এর এডিটর হু জিজিন অবশ্য দাবি করেছেন, না কুলায় এ ধরনের সংঘাতের খবর ভিত্তিহীন।