নয়াদিল্লি:  অবশেষে ভারত প্রস্তুত অগ্নি-ফাইভ আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করতে। ওড়িশার হুইলার দ্বীপ থেকে দুবছর পর অবশেষে এর চূড়ান্ত পরীক্ষা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।


প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে খবর, পরমাণু সক্ষম অগ্নি-ফাইভের সফল পরীক্ষা করতে প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুতেই এই পরীক্ষা করা হবে। সূত্রের খবর, অগ্নি ফাইভের সামান্য প্রযুক্তিগত কিছু ত্রুটি রয়েছে। সেগুলোর সমাধান হয়ে গেলেই চূড়ান্ত পরীক্ষা করা হবে।

প্রসঙ্গত, ভারতও ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট এনএসজি বা নিউক্লিয়ার সাপলায়ার গ্রুপে যোগ দেওয়ার আগে, নিজেদের সমস্ত ত্রুটি মুছে ফেলতে চাইছে। ২০১৫ জানুয়ারিতে যখন শেষবার অগ্নি ফাইভ মিসাইল পরীক্ষা করা হয়েছিল, তখন এর কিছু ইন্টারনাল ব্যাটারি ও ইলেক্ট্রনিক কনফিগারেশনগত ত্রুটি ছিল। সেই সমস্ত কিছু সমাধান করেই এগোতে চাইছে ভারত।

ভারতের বহু প্রতিক্ষীত অগ্নি ফাইভের চতুর্থ পরীক্ষা যদি সফল হয়, তাহলে এই ক্ষেপণাস্ত্র চিনের উত্তরপ্রান্ত পর্যন্ত আক্রমণ চালাতে পারবে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্যে এটা হল তিনটি স্তর বিশিষ্ট অগ্নি ফাইভ ক্ষেপণাস্ত্রের চূড়ান্ত পরীক্ষা, এরপরই স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স কম্যান্ড এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু করবে। প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে এসএফসি প্রতিষ্ঠিত হয় ভারতের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার সামলানোর জন্যে। সূত্রের খবর, এই পরমাণু অস্ত্র বেশি সংখ্যায় তৈরির আগে অন্তত আরও দুবার পরীক্ষা করা হবে।

এপ্রিল ২০১২-এ ওপেন কনফিগারেশনে পরীক্ষা করা হয় অগ্নি-ফাইভের। এরপর ২০১৩ সালে ফের দ্বিতীয়বার পরীক্ষা হয় এই পরমাণু ক্ষেপনাস্ত্রের। তারপর তৃতীয়বার পরীক্ষা করা হয় ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে। শেষবার এই ক্ষেপণাস্ত্রের কেনেস্তারা ভার্সানে উত্ক্ষেপণ করা হয়। জানা গিয়েছে এটাই অস্ত্রটিকে আরও মারাত্মক করে দিয়েছে, কারণ এর সাহায্যে ভারতের যেকোনও প্রান্ত থেকে হামলা চালানো যাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে।

একবার অগ্নি ফাইভের সূচনা হয়ে গেলে, ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চিনের সঙ্গে সেই সুপার-এক্সক্লিউসিভ ক্লাবে ঢুকে যাবে, যাঁদের ক্ষেপণাস্ত্র পাঁচ হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কিমি দূরত্ব পর্যন্ত আক্রমণ চালানোর ক্ষমতা রাখে।

স্বল্প দূরত্বের 'পৃথিবী' বা 'ধনুষ' মিসাইল ছাড়া, এসএফসি-র সৌজন্যে অগ্নি-১, অগ্নি-২, অগ্নি-৩ ক্ষেপণাস্ত্র এরআগে পরীক্ষা করেছে ভারত। প্রসঙ্গত, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে, অগ্নি ফোর এবং অগ্নি-ফাইভের মূল লক্ষ্য চিন।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক মনে করে, ভারতের অস্ত্র ভাণ্ডারে অগ্নি ফাইভের সফল অন্তর্ভূক্তি দেশের সীমান্তকে অনেক বেশি সুরক্ষিত করবে।