নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও সফররত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র বৈঠকে প্রত্যাশিতভাবেই উঠল সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ। সীমান্তপারের সন্ত্রাস সম্পর্কে ভারতের উদ্বেগের কথা টেরেসাকে জানিয়েছেন মোদী। দুই প্রধানমন্ত্রীই বলেছেন যে, সন্ত্রাসবাদ কোনও সীমাবদ্ধ নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ নয়।  বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে এই বিপদ ছড়িয়েছে।


টেরেসা ও মোদীর বৈঠকে ভিসা, সংগঠিত অপরাধ সংক্রান্ত বিভিন্ন স্বরাষ্ট্র বিষয়ক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও বাণিজ্য, লগ্নি, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা নিয়েও কথা হয়েছে। বৈঠকের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ২০০৮-এর নভেম্বরের মুম্বই হানা ও চলতি বছরের পঠানকোটে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলার চক্রান্তকারীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে পাকিস্তানের প্রতি সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন।

বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে মোদী ও টেরেসা বলেছেন, চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে যৌথভাবে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের পন্থাপদ্ধতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রীই সহমত হয়েছেন যে, সন্ত্রাসবাদ কোনও সীমাবদ্ধ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা নয়। বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলেই বিপদের খাঁড়া হয়ে ঝুলছে এই বিপদ। সন্ত্রাসবাদীরা সীমান্ত পেরিয়ে সমগ্র মানবসভ্যতাকেই বিপদগ্রস্ত করে তুলেছে।

নাম না করে সাংবাদিক বৈঠকে সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের মদতের অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী । মোদী বলেছেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীকে তিনি সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে ভারতের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। যে সব দেশ সন্ত্রাসবাদকে মদত দেয় এবং সমর্থন করে তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথাও টেরেসাকে জানিয়েছেন মোদী।

বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে টেরেসা উরির সেনা ছাউনিতে জঙ্গি হামলার কঠোর নিন্দা করেছেন। ঘটনায় নিহতদের পরিবারবর্গকে সমবেদনা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, কাশ্মীরের নিহত হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি বুরহান ওয়ানিকে ‘শহিদ’ তকমা দিয়েছে পাকিস্তান।  এজন্য নাম না করে পাকিস্তানের সমালোচনা করা হয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জঙ্গিদের ‘মহিমান্বিত’ করার চেষ্টা করা উচিত নয় এবং ভালো ও খারাপ জঙ্গি হিসেবে কোনও ফারাক করাও আদৌ কাঙ্খিত নয়। দক্ষিণ এশিয়াকে স্থিতিশীল, সম্বৃদ্ধ ও সন্ত্রাসের কবলমুক্ত করার জন্য সব দেশের একযোগে উদ্যোগী হওয়ার বিষয়েও সহমত পোষণ করেছেন দুই প্রধানমন্ত্রী।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার পক্ষে ভয়ঙ্কর বিপদ সন্ত্রাসবাদ। এক্ষেত্রে কোনওরকম পার্থক্য না করে আন্তর্জাতিক স্তরে সুসংহত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।