নয়াদিল্লি: ২১ জুন সিওলে পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী বা এনএসজি-র প্লেনারি মিটিং। তার আগে সবকটি অনিচ্ছুক রাষ্ট্রকে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে নয়াদিল্লি। তাদের স্পষ্ট কথা, স্রেফ মাপকাঠিতে উতরে গেলেই এনএসজি-র মত আন্তর্জাতিকভাবে অতি গুরুত্বপূর্ণ কোনও গোষ্ঠীর সদস্যপদ পাওয়া উচিত নয়। মাপকাঠির থেকে যোগ্যতাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হোক। এখন সিওলের বৈঠকে এনএসজি যদি সদস্যপদ পাওয়ার জন্য মাপকাঠিতে বেশি গুরুত্ব দেয়, তবে ভারতকে এই গোষ্ঠীতে ঢুকতে আরও ২-৩ বছর অপেক্ষা করতে হবে। উল্টোদিকে যদি যোগ্যতায় জোর দেওয়া হয়, তবে পরমাণু শক্তি ব্যবহারে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রটির আগের রেকর্ড খতিয়ে দেখা হবে, পরমাণু বাণিজ্য ও নিরস্ত্রীকরণে দেশটি কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে বিবেচিত হবে তাও।
ভারতীয় কূটনীতিকদের বক্তব্য, এনএসজি নির্দেশিকা মেনে ইতিমধ্যেই রফতানি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নিয়েছে দিল্লি। সামরিক ও অসামরিক পরমাণু প্রকল্প সম্পূর্ণ আলাদা করা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির সঙ্গে স্বাক্ষরিত হয়েছে অতিরিক্ত একটি প্রোটোকল সংক্রান্ত চুক্তি, যা নিয়ে অন্য কোনও এনপিটি স্বাক্ষর না করা দেশ এখনও কোনও পদক্ষেপই করেনি।
পাকিস্তানের পক্ষে এই সব মানদণ্ডে উতরোনো সম্ভব নয়, ফলে ভারতকে এনএসজি-র অন্তর্ভুক্ত করতে গেলে পাকিস্তানকেও একই সুবিধে দিতে হবে বলে চিন যে দাবি তুলেছে, তা ভিত্তিহীন।
সিওলের বৈঠকের আগে কূটনৈতিক রণনীতি অনুযায়ী ভারত ঠিক করেছে, পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করবে না তারা। মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরিও বলেছেন, বাহ্যিক কোনও আঞ্চলিক ইস্যুতে প্রভাবিত হবে না ভারত। দিল্লির যুক্তি, এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তি পরমাণু বিদ্যুৎ শক্তি আরও ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে, দূষণহীন এই শক্তি উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে দূষণ সংক্রান্ত উদ্বেগ কিছুটা হলেও দূর হবে।
কিন্তু কথা হল, সদস্য দেশ না হওয়ায় সিওলের বৈঠকে ভারতের প্রবেশাধিকার নেই। ফলে চিন এনএসজি অন্তর্ভুক্তি এখনকার মত মাপকাঠি নির্ভর রাখার জন্য চাপ দিলে তার উল্টো যুক্তি তুলে ধরতে পারবেন না ভারতীয় কূটনীতিকরা। তবে সদর্থক বিষয় হল, অস্ট্রিয়া, নিউজিল্যান্ড এতদিন এনএসজি-তে ভারতের প্রবেশের বিরোধিতা করলেও মার্কিন চাপে আগের অবস্থান থেকে খানিকটা সরেছে তারা। তুরস্ক অবশ্য চিনের পথ ধরেই এখনও পাকিস্তানের পক্ষে সওয়াল করছে।