নয়াদিল্লি:  সম্প্রতি ভারতীয় অর্থনীতিতে যে মন্দা গতি দেখা দিয়েছে, সেটা একেবারেই সাময়িক। প্রসঙ্গত, নোট বাতিল, চটজলদি জিএসটি কার্যকর করার ফলে ভারতীয় অর্থনীতিতে সাময়িক একটা নিম্নমুখী ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেই সমস্ত বাধা কাটিয়ে শীঘ্রই চাঙ্গা হয়ে উঠবে দেশের অর্থনীতি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে জিএসটির ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করবে অর্থনীতির ওপর, দাবি বিশ্বব্যাঙ্কের। বিশ্বব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম জানিয়েছেন, ভারতের মানুষরা শীঘ্রই নয়া এই কর ব্যবস্থার সুফল বুঝতে পারবে। আইএমএফ-এর সঙ্গে বিশ্বব্যাঙ্কের বার্ষিক সভার আগে এক কনফারেন্স কলে সাংবাদাকিদের একথা জানিয়েছেন বিশ্বব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট।

আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এই বৈঠক। সেখানে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। প্রসঙ্গত, এই বৈঠক শুরুর আগে সাংবাদিকরা বিশ্বব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্টের কাছে জানতে চেয়েছিলেন অর্থবর্ষের প্রথম কোয়ার্টারে ভারতীয় অর্থনীতিতে যে নিম্নমুখী ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে সে সম্পর্কে তাঁর মতামত। এইমুহূর্তে বিরোধী দলগুলো এবং একাধিক অর্থনীতিবিদ ভারতের অর্থনীতির এই হালের জন্যে  কেন্দ্রের দুটি সিদ্ধান্তকে কাটগড়ায় তুলেছে। তারমধ্যে একটি হল নোট বাতিল, অপরটি হল জিএসটি।  এপ্রিল-জুন এই সময়টায় ভারতে বৃদ্ধির হার ৫.৭ শতাংশ ছিল।সেখানে জানুয়ারি-মার্চে বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছিল ৬.১ শতাংশে। অথচ গতবছরই ওই একই সময় ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছিল ৭.৯ শতাংশে। তবে এই সমস্ত তথ্য দেখেও কিমের দাবি, এই পুরো পরিস্থিতিটাই সাময়িক।

সেই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, সাময়িক এই বাধা বিঘ্ন কাটিয়ে অদূর ভবিষ্যতে ফের ঘুরে দাঁড়াবে দেশের অর্থনীতি। স্থিতিশীলতা আসবে। তারপরই তিনি বলেন, পুরো পরিস্থিতির ওপর তাঁরা ভালভাবে নজর রাখছেন। ভারতের ব্যবসা ক্ষেত্রে উন্নতির জন্যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তাঁর আশা শীঘ্রই তার সুফল দেখতে পাবে সবাই।

আগামী সপ্তাহে আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাঙ্ক তাঁদের বৈঠকে বৃদ্ধির হার সংক্রান্ত নয়া তথ্য পেশ করবে। সেখানে ভারত সহ অন্যান্য দেশের বৃদ্ধির হার সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। কিমের দাবি, বিশ্ব অর্থনীতির গতি দীর্ঘদিন স্লথ ছিল। সেই অচলাবস্থা কাটিয়ে ধীরে হলেও উর্ধ্বমুখী বিশ্ব অর্থনীতি। ব্যবসা ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসছে। যদিও এত কিছুর মধ্যেও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে তেমন কোনও আশার আলো দেখা যাচ্ছে না মন্তব্য কিমের।

তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশকে স্বাস্থ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্যে সাহায্য করতে প্রস্তুত বিশ্বব্যাঙ্ক। হিউম্যান ক্যাপিটালকে অর্থনীতির বৃদ্ধিতে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তার জন্যে বিশ্বব্যাঙ্ক সবধরনের সাহায্য করতে প্রস্তুত।  মূলত সঠিক শিক্ষা দিয়ে, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে, নতুন চাকরির সুযোগ ঘটিয়ে অর্থনীতির উন্নয়নই তাঁদের আসল লক্ষ্য। কারণ, মানব সম্পদকে সঠিকভাবে ব্যবহার করেই যেকোনও দেশ থেকে দারিদ্র দূরীকরণ সম্ভব বলে মন্তব্য বিশ্বব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্টের।