নয়াদিল্লি: লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত নিরাপত্তা ব্যবস্থা যত দুর্ভেদ্য করে তুলছে, ততই রক্তচাপ বাড়ছে চিনের। শতাধিক ট্যাঙ্ক ও বিশাল সেনাবাহিনী মোতায়েন করে ভারত যেভাবে পূর্ব লাদাখকে পুরোপুরি ঘিরে ফেলেছে, চিন তা মোটেই ভাল চোখে দেখছে না। উল্টে গ্লোবাল টাইমস নামে তাদের এক উগ্র জাতীয়তাবাদী ট্যাবলয়েড প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে চিনা বিনিয়োগ পিছু হঠতে পারে।


গ্লোবাল টাইমসের ওই লেখায় মন্তব্য করা হয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় শতাধির রুশ ট্যাঙ্ক মোতায়েনের পরেও ভারত কীভাবে চিনা বিনিয়োগের আশা করতে পারে, তা বোধগম্য নয়। সংবাদপত্রটির দাবি, ভারতে ব্যবসার পরিবেশ মোটেই ভাল নয়, তা সত্ত্বেও চিনা শিল্পপতিরা সেখানে বিনিয়োগ করছেন। নিরক্ষরতার হারও খুব বেশি ফলে চিনাদের জন্য মোটেই ভারতের পরিবেশ আদর্শ নয়। অথচ এ সব সত্ত্বেও ভারত নিয়ন্ত্রণরেখায় ট্যাঙ্ক পাঠাচ্ছে! এর ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতার ভয়ে চিনা শিল্পপতিরা সে দেশে বিনিয়োগ করা থেকে সরে আসতে পারেন।

গ্লোবাল টাইমসের দাবি, ভারতের উচিত, চিনের থেকে শেখা, কীভাবে নগরায়ন ও শিল্পায়ন চলাকালীন চিন সব রাজনৈতিক মতানৈক্য দূরে সরিয়ে আর্থিক উন্নতিতে নজর দিয়েছিল। অর্থাৎ, এক কথায়, ভারতের উচিত, নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরিয়ে ‘উন্নয়নে’ নজর দেওয়া, যাতে চিন যথেচ্ছ অনুপ্রবেশ ঘটাতে পারে।

তবে বেজিংয়ের ‘সদুপদেশে’ মোটেই কান দিচ্ছে না দিল্লি। ১৯৬২-র যুদ্ধের পরেও এতদিন কার্যত খোলামেলা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা এই প্রথম মুড়ে ফেলা হয়েছে দুর্ভেদ্য নিরাপত্তার চাদরে। ট্যাঙ্ক তো মোতায়েন হয়েছেই, শূন্যের নীচে তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করা লাদাখের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিশাল বাহিনী পোস্ট করা হয়েছে। সেনা জানিয়েছে, ভারতকে যে কোনও মূল্যে তার আন্তর্জাতিক সীমান্ত রক্ষা করতে হবে।

চিনা সংবাদপত্রটি ভারতের সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে এত উদ্বিগ্ন হলেও ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা মাথায় রেখে টিবেট মিলিটারি কম্যান্ডকে শক্তিশালী করে তোলার ব্যাপারে অল্পদিন আগে তারাই যে খবর প্রকাশ করে, তা নিয়ে একটিও কথা বলেনি। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বেজিং যে দীর্ঘদিন ধরে সেনা বাড়িয়েছে, রাস্তাঘাট তৈরি করেছে, তা নিয়ে নিশ্চুপ তারা।