নয়াদিল্লি: জরুরি অবস্থার জন্য জার্মান একনায়কতন্ত্রী নেতা অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে প্রয়াত ইন্দিরা গাঁধীর তুলনা করায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলির তীব্র নিন্দা প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা অরুণ জেটলির। আজ কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতা আনন্দ শর্মা পাল্টা বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান আমাদের সংবিধান ও গণতন্ত্রকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে, বর্তমানে একজন কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী ও উদ্ধত সরকারের নজরদারিতে এখন ভারতে সেগুলিতে সিস্টেমমাফিক অন্তর্ঘাত ঘটানো হচ্ছে। ফলে ক্ষমতা, কর্তৃত্বের কেন্দ্রীকরণ ঘটছে, অশুভ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।


শর্মার দাবি, ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থা জারি করে নীতি বিচ্যুতি ঘটিয়েছিলেন ইন্দিরা, সেজন্য অনুতপ্তও ছিলেন। তিনি বলেন, জেটলির হিটলারের প্রতি অনুরাগের কারণ সহজেই বোঝা যায় কেননা তিনি যে আরএসএস-বিজেপি স্কুল থেকে এসেছেন, তারা হিটলারের গুণগান করে, ফ্যাসিবাদকে মহিমান্বিত করে। ইন্দিরা ছিলেন তাঁর সময়ের সবচেয়ে বড় নেত্রী, গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী। জেটলির ইন্দিরাজিকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করাটা অবাস্তব, ঘৃণ্য কাজ, ইতিহাসকে বিকৃত করা। বিজেপি-আরএসএসের তাঁর স্মৃতিকে অপমান বা তাঁর শহিদের মর্যাদাকে খাটো করার এক্তিয়ার নেই। ভারতের মানুষ তাঁকে সাহসিনী হিসাবে চিরকাল মনে রাখবে।

তিনি আরও বলেন, জরুরি অবস্থায় নীতিবিচ্যুতি ঘটেছিল, ইন্দিরা নিজে সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। জেটলি বেছে বেছে ভুলে যাওয়ার রোগে ভুগছেন। স্বৈরতন্ত্রীরা নির্বাচন করে না। বিজেপিকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ইন্দিরা অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করানোর জন্য জরুরি অবস্থা তুলে নিয়েছিলেন। তিনি হেরে গিয়েছিলেন, পরাজয় মেনে নিয়েছিলেন বিনম্রতার সঙ্গে।
শর্মার দাবি, ১৯৮০-তেই জরুরি অবস্থা ঘিরে বিতর্কের অবসান হয়ে গিয়েছিল যখন জনাদেশের বলে বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ইন্দিরা ক্ষমতায় ফেরেন, তাঁকে বিপদে ফেলা লোকজন, বিরোধীদের ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেন।

ইন্দিরার অবদান, সাহস, আত্মত্যাগকে ইতিহাস শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে রেখেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, বাংলাদেশের মুক্তি ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে কোনও সেনাবাহিনীর পাওয়া সবচেয়ে বড় জয়ের কথা কখনও ভোলা যাবে না। তাছাড়া ইন্দিরার সময়েই ভারত পরমাণু শক্তিধর, মহাকাশ বিজ্ঞানের বড় শক্তি হয়ে ওঠে।