গত বছরের জুন মাসে লাদাখের গালওয়ান ভ্যালিতে ভারতের ভূখণ্ডে ঢোকার চেষ্টায় থাকা চিনা সেনাদের আটকাতে ভয়ানক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিলেন। গোলা-গুলির ব্যবহার থেকে বিরত থাকার নিয়মের ফাঁক গলে চিনের লাল ফৌজ কাঁটা-পেরেক লাগানো লাঠি নিয়ে রাতের অন্ধকারে আক্রমণ শানিয়েছিল ভারতীয় সেনাদের উপর। ক্রমাগত পাথর, ইঁট ছোড়া হয়েছিল চিন সেনাদের তরফে।
কার্যত নিরস্ত্র অবস্থায় প্রতিকূল পরিস্থিতির বিরুদ্ধে পাল্টা লড়াই করেছিল ভারতীয় সেনা। কিন্তু দেশের ভূ-খণ্ড রক্ষা করার সময় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২০ জন সেনা। গত দু-দশক সময়কালে যে সম্মুখসমরই ছিল সবথেকে ভয়ঙ্কর লড়াই।
সরকারের এক সূত্র জানিয়েছে, ‘কর্নেল সন্তোষ বাবু সহ একাধিক সেনাকর্মীরা গালওয়ান ভ্যালিতে দেশের সীমান্ত রক্ষার সময় প্রভূত সাহসিকতার পরিচয় রেখেছিলেন। তাদের সেই বলিদানকে সম্মানিত করা হবে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন।’ এদিন প্রজাতন্ত্র দিবসের মহড়ার মাঝে পুরস্কার প্রদানের বিষয়টিতে সিলমোহর পড়তে দেখা গিয়েছে।
পূর্ব লাদাখের পোস্ট ১২০তে ইতিমধ্যে ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে ‘গ্যালেন্ট অফ গালওয়ান’ নামে শৌধ বানিয়েছে সেই হামলায় নিহত সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে। স্নো লেপার্ড অপারেশনের অধীনে সেনাদের বীরত্বের কথা সোনালি হরফে উল্লেখ করা রয়েছে যেখানে। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির বিরুদ্ধে তাদের লড়াই মনে রেখেছে দেশবাসীও। দিল্লির ওয়ার মেমোরিয়ালেও গালওয়ান ভ্যালিতে প্রাণ হারানো ২০ জনের উল্লেখ করা হয়েছে আলাদা করে।
মাঝে দীর্ঘদিন সময় কেটে গেলেও যে এখনও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএএসি) বিভিন্ন স্থানে চিনের সেনাদের সঙ্গে সম্মুখসমরের মতো পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভারতীয় সেনা। দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ইতিমধ্যে স্পষ্ট করেছে নিজেদের অবস্থানও। চিনের যে কোনও প্ররোচনা বা সীমান্ত দখলের চেষ্টার বিরুদ্ধে কড়া জবাব দেওয়ার বার্তাই দিয়ে রাখা হয়েছে। প্রবল শীতের মাঝেও তাই এলএএসি থেকে সেনা সরায়নি ভারত।