নয়াদিল্লি: ভারতে ঢুকতে জঙ্গিরা যে সুড়ঙ্গ ব্যবহার করেছিল, পাকিস্তানের ভূখণ্ডে প্রায় দুশো মিটার ঢুকে তা খুঁজে বার করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মঙ্গলবার প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক তা জানিয়েছেন।


দিন কয়েক আগে জম্মুর নগরোটায় এনকাউন্টারে নিহত জঙ্গিরা কোন পথে ভারতে ঢুকেছিল, তা নিয়ে তদন্ত করতে নেমে রাতের অন্ধকারে বিএসএফের একটি টিম ঢুকে পড়েছিল পাকিস্তানের ভূখণ্ডে। সরকারি সূত্রে খবর, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওই দলটি পাকিস্তানের ২০০ মিটার ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ-মুখের সন্ধান করতে গিয়েই বিএসএফের দলটি জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পাক ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে। জম্মুর নগরোটার কাছে টোল প্লাজার সামনে এনকাউন্টারে নিহত চার জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি যে সুড়ঙ্গ পথেই ভারতে ঢুকেছিল, সে খবর ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে ছিল বলেই ওই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। ফোনে সন্ত্রাসবাদীদের কথাবার্তা শুনেই সে সুড়ঙ্গের কথা সামনে আসে।

তাই চার জইশ জঙ্গি খতম হওয়ার পর, বিএসএফের তদন্তকারী দলের মূল লক্ষ্য ছিল, আগে সেই সুড়ঙ্গের সন্ধান করা। সুড়ঙ্গের অভিমুখ যে ভারতেই, তা নিয়ে তদন্তকারীদের মনে সন্দেহের কোনও অবকাশই ছিল না। তাই আগে সুড়ঙ্গ-মুখের খোঁজ করতে বিএসএফের ওই টিমটি পাক ভূখণ্ডে নিঃশব্দে ঢুকেছিল।

সূত্রের খবর, রাতের অন্ধকারে ভারত-পাক আন্তর্জাতিক সীমান্তের ২০০ থেকে ৩০০ মিটার ভিতরে ঢুকে পড়েছিল বিএসএফ। শেষ পর্যন্ত সুড়ঙ্গ-মুখের সন্ধানও তাঁরা পান। ফিরে এসে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওই দলটি জানায়, যেখানে সুড়ঙ্গমুখ, তার থেকে কয়েক হাত দূরেই পাকসেনার শিবির। সুড়ঙ্গের একটি মুখ পাকিস্তানে, অপরটি ভারতে। বিএসএফের ওই পেট্রোল পার্টি পাক ভূখণ্ড থেকে সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে, ভূগর্ভস্থ পথ ধরে ভারতে এসে বেরোয়।

জম্মু বিভাগের বিএসএফের ইন্সপেক্টর জেনারেল এন এন জামওয়াল বলেছেন, ‘নাগরোটায় ঢোকার সময় জঙ্গিরা এই দেড়শো মিটার লম্বা সুড়ঙ্গ ব্যবহার করেছিল বলেই আমাদের মনে হয়েছে। পাশাপাশি আণাদের মনে হয়, কোনও একজন গাইড ছিল যে জঙ্গিদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।’ জানা গিয়েছে, ওই সুড়ঙ্গের মুখ ঝোপঝাড়, আগাছা ও মাটি দিয়ে খুব ভালভাবে গোপন করা ছিল। পাকিস্তানের করাচির লেবেল থাকা বস্তায় বালি ভরে সুড়ঙ্গের দেওয়ালের ভেতরে সাজানো ছিল। যাতে ধস নেমে সুড়ঙ্গ বন্ধ না হয়ে যায়। বিএসএফ সূত্রে খবর, সুড়ঙ্গটি সদ্য কাটা হয়েছিল এবং একবারই ব্যবহার করা হয়েছে। প্রযুক্তির সাহায্যও নেওয়া হয়েছিল সেটি তৈরি করতে।