নয়াদিল্লি: গত আগস্টে সুপ্রিম কোর্ট তাৎক্ষনিক তিন তালাক একতরফা, অসাংবিধানিক বলে রায় দেওয়ার পরও এই নিন্দনীয় কুপ্রথার ব্যবহার বন্ধ হয়নি। এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বাধীন আন্তঃমন্ত্রীগোষ্ঠীর খসড়া আইনে তাৎক্ষনিক তিন তালাক ঘোষণা বেআইনি, বাতিল প্রথা বলা হল। 'মুসলিম মহিলাদের বিবাহ সংক্রান্ত অধিকার রক্ষা' শিরোনামে ওই খসড়ায় তিন তালাক দেওয়া স্বামীর তিন বছরের কারাবাস, জরিমানা হবে বলে জানানো হয়েছে। একতরফা তিন তালাক ঘোষণা জামিন-অযোগ্য, ধর্তব্যযোগ্য অপরাধ বলে দেখা হবে।
খসড়াটি রাজ্য সরকারগুলিকে পাঠিয়ে এ ব্যাপারে তাদের মতামত চাওয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে জবাব পাঠাতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
ওই মন্ত্রিগোষ্ঠীতে আছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ও তাঁর মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পি পি চৌধুরি। প্রস্তাবিত আইনটি প্রযোজ্য হবে শুধুমাত্র তাৎক্ষনিক তিন তালাক বা তালাক-ই-বিদ্দতের ক্ষেত্রে। আইনে নির্যাতিতাকে নিজের ও তাঁর নাবালক সন্তানের জন্য 'যথোপযুক্ত ভাতা' দাবি করে ম্যাজিস্ট্রেটের দ্বারস্থ হওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নাবালক সন্তানের অধিকারও দাবি করতে পারবেন তিনি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ম্যাজিস্ট্রেট।
খসড়া আইনে মৌখিক, লিখিত বা এসএমএস, ই মেল, হোয়াটসঅ্যাপের মতো যাবতীয় ইলেকট্রনিক মাধ্যম, যে কোনও ভাবে ঘোষণা করা তিন তালাক বেআইনি বলে দেখা হবে। সূত্রের খবর, খসড়ায় নির্যাতিতাকে ভাতা ও শিশুর অধিকার দেওয়ার বিধি রাখা হয়েছে এই কারণে যাতে স্বামী স্ত্রীকে বাড়ি ছাড়তে বললে তিনি আইনি সুরক্ষা পান। জম্মু ও কাশ্মীর বাদে দেশের সর্বত্র আইনটা কার্যকর হবে।
এক সরকারি অফিসার জানান, সরকারের ধারণা ছিল, সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের পর আপনা থেকেই তাৎক্ষনিক তালাক দেওয়ার প্রথা বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু তিন তালাক চলছেই। ওই রায়ের আগে ১৭৭টি তিন তালাকের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়, রায় বেরনোর পর ৬৬টি। শীর্ষে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। তাই সরকার আইন চালু করার রাস্তায় হাঁটছে। গার্হস্থ্য হিংসা রোধ আইনের ধারাগুলি তিন তালাকের ক্ষেত্রে নির্যাতিতার তেমন কাজে আসছে না।