শ্রীনগর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জম্মু ও কাশ্মীর সফরকে কেন্দ্র করে সাজ সাজ রব উপত্যকায়। মোদির সফর যাতে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়, সেসময় কোনও অশান্তি না হয়, সেজন্য আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা রবিবার সকাল থেকেই বন্ধ রাখা হয়। উপত্যকার সর্বত্র মোতায়েন করা হয়েছে নিরাপত্তাবাহিনীকে। মোদির সফরের বিরোধিতায় আজ উপত্যকায় সম্পূর্ণ হরতালের ডাক দেয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলি। অবশ্য শনিবার থেকেই গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে হুরিয়ত কনফারেন্স চেয়ারম্যান মিরওয়াইজ ওমর ফারুক, লাঙ্গেটের প্রাক্তন বিধায়ক শেখ আব্দুল রশিদ সহ একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে। কোনও অশান্তির খবর না থাকলেও হরতালের প্রভাবে উপত্যকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়েছে। অশান্তির ভয়ে রাস্তায় যানবাহন নামেনি, বন্ধ দোকানপাট, বাজার, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানও।
এদিকে জম্মুর সভায় নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের পক্ষে জোর সওয়াল করে মোদি জানিয়ে দেন, ‘মা ভারতী’র যেসব সন্তান পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের নির্যাতন, যন্ত্রণা সহ্য করছেন, তাঁর সরকার তাঁদের পাশে থাকবে। বলেন, এককালে যাঁরা ভারতেরই অংশ ছিলেন, কিন্তু ১৯৪৭-এর বিভাজনের ফলে আমাদের থেকে আলাদা হয়ে যান, তাঁদের পাশে দাঁড়াব আমরা। নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরোধিতা করায় কংগ্রেসকে আক্রমণ করে তাঁর দাবি, ক্ষমতায় থাকাকালে ‘আমাদের ভাই, বোনেদের যন্ত্রণা’র দিকে ওদের কোনও নজরই ছিল না। কিন্তু আমরা এই দায়বদ্ধতা থেকে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল এনেছি যে, ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে ওরা বৈষম্যের শিকার হলে আমরা ওদের পাশে থাকব।
এ প্রসঙ্গে কর্তারপুর করিডর প্রসঙ্গ টেনে তিনি আক্রমণ করেন কংগ্রেসকে। বলেন, দেশের প্রয়োজন, চাহিদা, সেন্টিমেন্ট উপেক্ষা করার প্রবণতা ছিল আগের সরকারের। সেটা আপনারা ভালই জানেন। ওরা আন্তরিক হয়ে নজর দিলে গুরু নানক দেবের ভূমি আজ ভারতের অংশ হত। পাকিস্তানের কর্তারপুরের গুরুদ্বার দরবার সাহিবের উল্লেখ করেন তিনি।
লে, বিজয়পুরে কয়েকটি জনসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সন্ত্রাসবাদী হামলার মুখে কাশ্মীর উপত্যকার ভিটেমাটি ছেড়ে পালানো কাশ্মীরী পন্ডিতদের প্রতি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দায়বদ্ধ বলেও জানান তিনি। বলেন, ওদের নিজেদের মাটি ছাড়তে হয়েছে, অশেষ দুর্ভোগ সহ্য করতে হয়েছে। আমি বলিনি বটে, কিন্তু ওঁদের যন্ত্রণা আমিও অনুভব করি।