নয়াদিল্লি: বিহারে নয়া রাজনৈতিক সমীকরণে কি জেডিইউ-এর অন্দরে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা তেমনই বলছেন। গতকাল সন্ধ্যায় আরজেডি ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকার ভেঙে বিজেপি-র সঙ্গে নতুন জোট সরকার গঠন করেছেন নীতীশ কুমার। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত একটিও কথা বলেননি জেডিইউ-এর অন্যতম প্রধান নেতা শরদ যাদব। আজ সকালে ফের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নীতীশের শপথ গ্রহণের সময়ও তিনি ছিলেন না। দিল্লিতে রয়েছেন শরদ। তিনি কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সন্ধ্যায় নীতীশের বিরোধিতা করা দলীয় সাংসদ আনোয়ার আলির সঙ্গেও শরদের বৈঠক করার কথা রয়েছে। তাঁর আচরণেই স্পষ্ট, ফের বিজেপি-র সঙ্গে জোট হওয়ায় মোটেই খুশি নন।


নীতীশ ফের বিজেপি-র সঙ্গে জোট করায় তাঁকে তীব্র আক্রমণ করেছেন রাহুল। তাঁর দাবি, ব্যক্তিগত লাভের জন্যই স্বার্থপরের মতো কাজ করেছেন নীতীশ। এর কিছুক্ষণ পরেই রাহুলের সঙ্গে শরদের বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সম্প্রতি ১৮টি বিরোধী দলের দুটি বৈঠকে শরদ বলেছিলেন, বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে লড়াই করবে জেডিইউ। কিন্তু গত কয়েক মাসে নীতীশ ঠিক উল্টো কাজ করে গিয়েছেন। প্রথমে নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করার পরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দকেও সমর্থন করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বিরোধী দলগুলির বৈঠকেও যোগ দেননি। শরদই বিরোধীদের বৈঠকে জেডিইউ-এর প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। কিন্তু তিনি বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেটাকে নস্যাৎ করে দিয়ে ফের বিজেপি-র হাত ধরলেন নীতীশ।

জেডিইউ-এর অন্তর্দ্বন্দ্বকে উস্কে দিয়েছেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব। তিনি বলেছেন, আগামীকাল বিধানসভায় আস্থাভোটের সময় জেডিইউ-এর মুসলিম বিধায়কদের বিবেকের কথা শুনে ভোট দেওয়া উচিত। রাজ্যসভার সাংসদ আনোয়ার ইতিমধ্যেই নীতীশের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন। তিনি বলেছেন, নীতীশের এই সিদ্ধান্ত বিপর্যয় এবং দুঃখজনক ঘটনা। দলীয় বৈঠকে মুখ খোলার সুযোগ পেলে তিনি অবশ্যই আপত্তির কথা জানাবেন।

তবে অপর এক জেডিইউ নেতা আর সি পি সিংহ অবশ্য আনোয়ারের পাল্টা সমালোচনা করেছেন। তাঁর কটাক্ষ, দু বার বিজেপি-র সমর্থনে রাজ্যসভার সাংসদ হতে আনোয়ারের কোনও সমস্যা হয়নি। তাঁর মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। তাঁকে ফের রাজ্যসভায় পাঠানো না-ও হতে পারে বুঝেই এই ধরনের মন্তব্য করছেন আনোয়ার।