জম্মু ও শ্রীনগর: অশান্তি, সংঘর্ষ ও হিংসার জেরে দীর্ঘদিন শিকেয় থাকা পঠনপাঠন ফের শুরু হচ্ছে জম্মু ও কাশ্মীরে।


একদিকে জম্মুতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর অঞ্চলে স্কুল ফের খোলার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। অন্যদিকে, শ্রীনগরে বোর্ড পরীক্ষায় বসল কয়েক হাজার পরীক্ষার্থী।


অশান্তির কালো ছায়াকে পেরিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ ফিরছে উপত্যকায়। বিশেষ করে, বন্ধ হয়ে পড়া পঠনপাঠন ব্যবস্থাকে পুনরায় চালু করতে তৎপর মেহবুবা মুফতি সরকার।


পাকিস্তান সোনার ভারী গোলাগুলির জন্য গত ১ নভেম্বর আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর প্রায় ১৭৪ স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় রাজ্য প্রশাসন। এদিন সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। জম্মু পুলিশের ডিসিপি সিমরনদীপ সিংহ জানান, আগামীকাল থেকেই সব স্কুল ফের চালু হচ্ছে।


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর থেকে প্রায় ২৮৬ বার সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে পাকিস্তান।


এর মধ্যে ১৮৬ বার শুধুমাত্র ১৯০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য আন্তর্জাতিক সীমান্তে ঘটেছে। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রায় ১০০ বার যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে পাক সেনা। এতে ১৪ জওয়ান শহিদ হয়েছেন এবং  বহু নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছেন।



জম্মুর পাশাপাশি, পঠনপাঠন শুরু হয়েছে হিংসা-বিধ্বস্ত কাশ্মীরেও। এদিন হাজার হাজার পরীক্ষার্থী রাজ্যের দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় বসে। আগের তুলনায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরছে সেখানে। সড়কে বেড়েছে পরিবহণ। রাস্তায় নেমেছে বেশি সংখ্যক মানুষ। খুলছে দোকানপাট, বাজার, অফিস ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।


জানা গিয়েছে, কাশ্মীর ডিভিশনের এই পরীক্ষায় বসে প্রায় ৪৮ হাজার পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা নেওয়া হয় ৪৮৪টি সেন্টারে। পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করার বিষয়টি মাথায় রেখে ব্যাপক বন্দোবস্ত করেছে রাজ্য প্রশাসন।


প্রসঙ্গত গত জুলাই মাসে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হিজবুল মুজাহিদিন নেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে বিক্ষোভ, অশান্তি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ডাকা লাগাতার বনধের জেরে অচল হয়ে পড়ে কাশ্মীর। হিংসায় দুই পুলিশকর্মী সহ মারা যান ৮৫ জন। আহত হন কয়েক হাজার।