নয়াদিল্লি: পেট্রল, ডিজেলের ওপর শুল্ক ছাঁটাইয়ের প্রস্তাব কার্যত উড়িয়ে দিলেন অরুণ জেটলি। তিনি বলেছেন, বেতনভোগী লোকজন তাঁদের ভাগের কর দিচ্ছেন, কিন্তু বাকি বেশিরভাগ অংশের কর দানের রেকর্ড ভাল করতে হবে। তাদের রেকর্ড ভারতকে 'কর ব্যবস্থায় অনুগত সমাজ' হয়ে ওঠা থেকে অনেক দূরে সরিয়ে রেখেছে। তাই সব রাজনৈতিক দল ও জনমত তৈরি করা লোকজনকে আমার আন্তরিক আবেদন, তেল ক্ষেত্রের বাইরে কর ফাঁকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে, লোকে সততার সঙ্গে কর দিলে কর বাবদ রাজস্বের জন্য তেলের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমবে। আর্থিক পাটিগনিতে বিঘ্ন ঘটালে মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যতে উল্টো ফল হতে পারে।

অর্থনীতি সংক্রান্ত এক ফেসবুক পোস্টে জেটলি লিখেছেন, গত চার বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের কর-জিডিপি অনুপাত ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১১.৫ শতাংশ হয়েছে। এর প্রায় অর্ধেক অর্থাত্ জিডিপির ০.৭২ শতাংশ হল তেল বাদে বাকি কর-জিডিপি রেশিও। ২০১৭-১৮য় জিডিপি-তে তেল ক্ষেত্রের বাইরের করের হার ৯.৮ শতাংশ। ২০০৭-০৮ থেকে এটাই সর্বোচ্চ হার। ওই বছরে আমাদের রাজস্ব অবস্থা আন্তর্জাতিক বাজারে তেজি ভাব থাকার ফলে চাঙ্গা ছিল। এই সরকার আর্থিক ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা ও বুনিয়াদি অর্থনীতিতে দায়িত্বশীল আচরণের জন্য সুখ্যাতি পেয়েছে। ২০১৩-য় কী হয়েছিল, আমরা জানি। আর্থিক ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা থাকলে আরও বেশি ধার করতে হয়, তার মূল্যও বেড়ে যায়। উপভোক্তাদের সুরাহা দিতে পারে শুধুমাত্র আর্থিক দায়দায়িত্বের প্রতি যত্নবান, আর্থিক ভাবে সবল কেন্দ্রীয় সরকার এবং সেই রাজ্যগুলি যারা তেলের দামে অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে বেশি আয় করছে।

শীর্ষ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম তেলের দামে কর লিটারে ২৫ টাকা কমানো সম্ভব, কিন্তু মোদী সরকারই করছে না বলে যে দাবি করেছেন, সে প্রসঙ্গে তাঁর মত, এই প্রস্তাব একটা 'ফাঁদ'। চিদম্বরমের নাম না করে জেটলির কটাক্ষ, 'বিদগ্ধ পূর্বসূরী' নিজে কিন্তু এমন করার চেষ্টা করেননি কখনও। এর পরিণতিতে ভারতকে অকল্পনীয় ঋণের দিকে ঠেলে দেবে, যা ইউপিএ সরকার ঐতিহ্য হিসাবে ফেলে গিয়েছে। মনে রাখতে হবে, অর্থনীতি, বাজার কাঠামোগত সংস্কার, আর্থিক বিচক্ষণতা, বুনিয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতাকেই পুরস্কৃত করে, আর্থিক বিশৃঙ্খলা, দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপকে সাজা দেয়। ইউপিএ জমানার নীতিপঙ্গুত্ব থেকে এনডিএ-র সবচেয়ে দ্রুত বেড়ে চলা অর্থনীতি হয়ে ওঠার রূপান্তর এটাই পরিষ্কার দেখিয়ে দেয়।