নয়াদিল্লি:  দেশজুড়ে বাতিল হওয়া ৫০০, ১০০০ টাকার বদলি নোট পেতে হয়রান, নাকাল আমজনতা। এটিএম, ব্যাঙ্ক থেকে চাহিদামতো নোট মিলছে না। মানুষের দুর্ভোগে পড়ার কথা মেনে নিয়েছেন অরুণ জেটলিও। দুর্ভোগের ছবিটা যে খুব শীগগির বদলাবে, তেমন ভরসাও পাওয়া যাচ্ছে না। খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীই বলে দিয়েছেন, দেশের প্রায় ২ লক্ষ এটিএম পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে দু-তিন সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। কেননা ১০০-র পাশাপাশি নতুন চেহারার ২ হাজার টাকা, ৫০০ টাকার নোট এটিএমগুলিতে ভরে ঠিকমতো দিতে গেলে প্রতিটি টাকার ভেন্ডিং মেশিন ধরে ধরে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত পরিবর্তন করতে হবে। তিনি বলেন, যেহেতু গোপনীয়তার বিষয়টিও ছিল, সেজন্য নোট বাতিলের সরকারি ঘোষণা হওয়ার আগেভাগে এটিএমগুলিতে প্রয়োজনীয় বদল করা যায়নি। এই প্রক্রিয়ায় কয়েক হাজার লোক জড়িত থাকেন। তাই গোপনীয়তা রক্ষা করা সম্ভব হত না।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও অন্য ব্যাঙ্কগুলি ১৪ লক্ষ কোটি টাকা অর্থমূল্যের বাতিল হওয়া ৫০০ ও হাজার টাকা নোটের বদলি হিসাবে পর্যাপ্ত নোট মজুত করেছে, এহেন আশ্বাস দিয়ে সরকার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বলে জানান জেটলি। বলেন, এ এক বিশাল কর্মকাণ্ড। প্রথম কয়েকটা দিন হয়তো অসুবিধা হবে, কিন্তু সরকারের প্রয়াসে দীর্ঘমেয়াদে সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিরই লাভ হবে।

জেটলি দেশবাসীকে ধৈর্য্য রাখার আবেদন করেন। তাঁদের পরামর্শ দেন, তাঁরা বাতিল হয়ে যাওয়া নোট বদলাতে ব্যাঙ্কে তড়িঘড়ি না দৌড়ে সরকার যে ৫০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে, তা ব্যবহার করে মাঝেমধ্যে যান।

এদিন নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের নিন্দা করে বিরোধীদের প্রতিক্রিয়াকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলেও কটাক্ষ করেন জেটলি। অরবিন্দ কেজরীবাল আজ ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পদক্ষেপকে বিরাট কেলেঙ্কারি আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগেই এই সিদ্ধান্তের কথা বিজেপি তার মিত্রদের জানিয়ে দিয়েছিল। তিনি কটাক্ষ করে এও বলেন, এ তো কালোকারবারীদের ওপর নয়, সাধারণ মানুষের ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ওপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। আবার কংগ্রেস মুখপাত্র কপিল সিব্বলও নোট বাতিলকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে 'জুমলা' বলে আক্রমণ করে দাবি করেন, কালো টাকা, দুর্নীতি মোকাবিলায় সত্যিই সিরিয়াস হলে বিজেপিকেও  আসন্ন উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব ও অন্যান্য রাজ্যের নির্বাচনের জন্য কত খরচ করবে, সব প্রকাশ করতে হবে।

এসবের পাল্টা জেটলির দাবি, নানা রকম প্রতিক্রিয়াই আসছে। অনেকগুলিই দায়িত্বজ্ঞানহীন। কারও আবার রাজনৈতিক সিস্টেম  সাফ করার চলতি প্রয়াসে আপত্তি আছে।