নয়াদিল্লি:করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রাণপাত পরিশ্রম করছেন, ঠিক তখনই ঝাড়খণ্ডে উলট পুরাণ! পশ্চিম সিংভূম জেলার একটি সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সক ও তাঁর চিকিত্সক স্ত্রী কাজে ইস্তফা দিলেন। করোনাভাইরাস আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিযুক্তি ঘিরে হোয়াটস্যাপ ও পরে ইমেলের মাধ্যমে ওই চিকিত্সক দম্পতি ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এক আধিকারিক। ওই চিকিত্সকের নাম অলোক তির্কে। প্রশাসন অবশ্য এ ব্যাপারে কড়া মনোভাব নিয়েছে। পশ্চিম সিংভূম জেলার সিভিল সার্জেন মঞ্জু দুবে বলেছেন, স্বাস্থ্য সচিব নিতিন মদন কুলকার্নির নির্দেশ অনুযায়ী তিনি মঙ্গলবার ওই চিকিত্সককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার সময়সীমা ধার্য করেছেন।
ডাক্তার দুবে বলেছেন, আমি ডাক্তার তির্কেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। অন্যথায় ঝাড়খণ্ড মহামারি রোগ (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণ -২০২০ এবং ১৮৯৭-এর মহামারি রোগ আইন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে। অবিলমম্বে কাজে যোগ না দিলে তাঁর মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই) রেজিস্ট্রেশনও বাতিল হয়ে যেতে পারে।
ডাক্তার দুবে আরও বলেছেন, তির্কে এর আগে জেলায় জেলা খণিজ তহবিল ট্রাস্টের অধীনে কাজ করতেন।। পরে সেই কাজে ইস্তফা দিয়ে সদ্য গড়ে ওঠা দুমকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যোগ দেন। এরপর সেখানে কাজ ছেড়ে সদর হাসপাাতালে কয়েকদিন আগেই যোগ দিয়েছিলেন। তিন দিন আগে তাঁকে করোনাভাইরাস আইসোলশন ওয়ার্ডে নিযুক্ত করা হয়।
পশ্চিম সিংভূম জেলার সিভিল সার্জেন জানিয়েছেন, ওই চিকিত্সক দম্পতি ছাড়া সদর হাসপাতালের অন্য ২৩ চিকিত্সকের মধ্যে কেউ পদত্যাগ তো দূরের কথা, ছুটির আবেদনও করেননি।
সিভিল সার্জেন জানিয়েছেন, পদত্যাগের কারণ হিসেবে তির্কে তাঁর স্ত্রী চিকিত্সক সৌম্যর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার উল্লেখ করেছেন। তির্কে স্পেশ্যালিস্ট ফিজিশিয়ান।


তির্কের অবশ্য দাবি তিনি ‘অফিস রাজনীতি’র শিকার। তাঁর স্ত্রী ও বোন ইমিউনোসাপ্রেসিভ অবস্থায় রয়েছেন। তাই রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। তিনি বলেছেন, সেজন্যই আমরা আমাদের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছি। আমার বোনের সম্প্রতি রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, আমি পালিয়ে যাওয়ার মতো লোক নই। এই সময়টা আমি পরিষেবা দেব। কিন্তু কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সংকট পর্ব মিটলেই আমি চাকরি ছেড়ে দেব।
তির্কে আরও বলেছেন, তাঁর মেয়াদের সময় তিনি কীভাবে পরিষেবা দিয়েছিলেন তা চাঁইবাসার মাানুষ জানেন। তিনি বলেছেন, ‘এখানে আমি চারদিন আগে এখানে নন-কমিউনিকেটেভ রোগ বিভাগে পুনরায় কাজে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু পরের দিনই আমাকে একা করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিযুক্ত করা হয়। অন্য চিকিত্সকদদের কেন আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিয়োগ করা হল না। আর একলা কীভাবে রোগীদের ভিড় সামলাব। প্রথমদিন সকাল ১০ টা থেরে দুপুর একটা পর্যন্ত কোনও প্রোটেক্টিভ কিট ছাড়াই আইসোলেশন ওয়ার্ডের কাজ সামলেছি’।