রাঁচি: আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযোগ না থাকায় রেশন না পেয়ে গত মাসে ঝাড়খণ্ডে যে মেয়েটির অনাহারে মৃত্যু হয়েছে, তাঁর মা এবার গ্রামবাসীদের আক্রমণের মুখে পড়লেন। কৈলি দেবী নামে ওই মহিলা জানিয়েছেন, গ্রামের বদনাম করার অভিযোগে তাঁদের বাড়িতে হামলা করেন গ্রামবাসীরা। প্রাণে বাঁচতে আট কিমি দূরে জলডেগা ব্লকের পতিয়াম্বা গ্রামে তারামণি সাহু নামে এক সমাজকর্মীর বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন কৈলি দেবী। তারামণি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সিমডেগা জেলার ডেপুটি কমিশনার মঞ্জুনাথ ভজন্ত্রী বলেছেন, গ্রামবাসীদের দাবি, অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে তা সত্ত্বেও তাঁরা আক্রান্ত মহিলা ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে কৈলি দেবী গ্রামে ফিরেছেন। তবে তিনি এখনও আতঙ্কিত।


গত ২৮ সেপ্টেম্বর সিমডেগা জেলার করিমাটি গ্রামে সন্তোষী কুমারী নামে ১১ বছর বয়সি ওই মেয়েটির মৃত্যু হয়। তার পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ড যুক্ত না হওয়ায় এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকেই তাঁরা রেশন পাচ্ছেন না। ফলে খাওয়ার সমস্যা চরম আকার ধারণ করেছে। সন্তোষী স্কুলে গেলে মিড-ডে মিল খেতে পেত। কিন্তু স্কুলে না যাওয়ায় সে চারদিন খেতে পায়নি। অনাহারেই তার মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন অবশ্য অনাহারে মৃত্যুর খবর অস্বীকার করেছে। প্রশাসনের দাবি, মেয়েটির ম্যালেরিয়া হয়েছিল। সেই কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের খাদ্যমন্ত্রী সরযূ রায়ের দাবি, রেশন পাওয়ার জন্য আধার থাকা বাধ্যতামূলক নয়।

কৈলি দেবী প্রশাসনের এই দাবি অস্বীকার করে বলেছেন, ‘আমার মেয়ের ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হয়নি। ও মৃত্যুর মুহূর্তেও ভাতের জন্য কাঁদছিল। ওর ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে বলে কোনও কাগজে আমি আঙুলের ছাপ দিইনি।’

স্থানীয় এক সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী মালা দেবীও সরকারি দাবির বিরোধিতা করে বলেছেন, সন্তোষীর কোনও রোগ হয়েছিল বলে তাঁর জানা নেই। এরপরেই মালা দেবীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে সমাজকর্মীদের অভিযোগ, সন্তোষীর মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করার জন্যই সাসপেন্ড হতে হয়েছে মালা দেবীকে।