ফরিদাবাদ (হরিয়ানা): দিল্লি-মথুরা ট্রেনে গণপ্রহারে জুনেইদ খান নামে কিশোরে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় গতকাল গ্রেফতার হওয়া প্রধান অভিযুক্ত তাকে ও তার ভাইকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার অভিযোগ কবুল করেছে বলে জানাল পুলিশ। তবে ছুরিটি এখনও পাওয়া যায়নি বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানান রেল পুলিশ সুপার কমল দীপ গোয়েল।


ফরিদাবাদের জেলা ও দায়রা আদালত অভিযুক্তকে দুদিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। রেল পুলিশ অবশ্য তাকে তিনদিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়েছিল।

২২ জুন, ঘটনার দিন থেকেই পলাতক ছিল সে। ৩০ বছর বয়সি লোকটি হরিয়ানার পালওয়ালের বাসিন্দা। সে দিল্লির এক ফার্মে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে জুনেইদের ভাই অভিযুক্ত ব্যক্তি ট্রেনে হামলার সময় তাদের গোমাংসভক্ষণকারী বলে কটাক্ষ, বিদ্রূপ করেছিল বলে দাবি করলেও পুলিশ অফিসার জানান, এখনও পর্যন্ত প্রধান অভিযুক্তকে জেরা করে এ ধরনের কোনও তথ্য উঠে আসেনি। তিনি জানান, এমনকী অভিযোগকারীও ঘটনার দিন ট্রেনে বিবাদের কারণ হিসাবে গোমাংসের কথা বলেননি। তিনি জানান, অভিযুক্ত দিল্লির শিবাজি ব্রিজ স্টেশনে ট্রেনে উঠেছিল সেদিন।

এদিকে জুনেইদের বাবা জালালুদ্দিনের দাবি, ছেলের হত্যায় জড়িত সবার মৃত্যুদণ্ড চাই। মূল অভিযুক্ত জুনেইদ হত্যার ১৫ দিনের মধ্যে মহারাষ্ট্রের ধুলেতে গতকাল গ্রেফতার হয়েছে। ধুলের পুলিশ সুপার এম রামকুমার বলেন, তাকে হরিয়ানা পুলিশ শনিবার অপরাহ্নে সাকরি থানা এলাকায় আটক করে। পুলিশ ডায়েরি করে তাকে নিয়ে হরিয়ানা চলে যায় তারা। জুনেইদকে হত্যার কথা সে কবুল করেছে বলে দাবি পুলিশের।

মহারাষ্ট্র পুলিশের ডিজিপির কার্য্যালয়ের এক পদস্থ অফিসার বলেন, সে ঘটনার পর পালিয়ে ধুলেতে আত্মীয়স্বজনদের কাছে ছিল। হরিয়ানা পুলিশ প্রযুক্তির মাধ্যমে নজর রাখছিল তার ওপর।

জুনেইদের বাবা বলেন, সরকারকে বলব, অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক। জড়িত বাকি যারা ধরা পড়েনি, তাদের ধরুক পুলিশ। দেশের প্রতিটি জায়গায় রোজই এমন ঘটনা ঘটছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। জুনেইদের ভাই শাকির বলেন, পুলিশকে ধন্যবাদ দিতে চাই প্রধান অভিযুক্ত ও বাকিদের গ্রেফতার করতে সক্রিয় হওয়ার জন্য। গোটা দেশে জাতপাত বা ধর্মীয় কারণে গণপিটুনির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জুনেইদের পাশপাশি সেদিন আক্রান্ত হয়েছিলেন শাকিরও।
গাজিয়াবাদ-মথুরা ট্রেনে গত ২২ জুন আক্রান্ত হয় জুনেইদরা। দিল্লিতে ইদের কেনাকাটা সেরে হরিয়ানার গ্রামে ফিরছিল তারা। বসার আসনকে কেন্দ্র করে বিবাদের জেরে একদল লোক তাদের মারধর করে।

অভিযোগ, তাদের গোমাংস ভক্ষণকারী বলে কটাক্ষ, ব্যঙ্গবিদ্রূপও করা হয়। ছুরির কোপ মারা হয় জুনেইদ, তার দুই ভাই হাসিম, শাকিরকে। জুনেইদের সেদিনই মৃত্যু হয়।