নয়াদিল্লি:  কর্নাটকে স্থিতিশীল সরকার গঠন করবে কংগ্রেস-জেডিএস জোট। দিল্লি পৌঁছে এমনটাই জানালেন এইচ ডি কুমারস্বামী। ভাবী মুখ্যমন্ত্রীর আশা, কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হবে।


বুধবার, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা জনতা দল (সেকুলার) সুপ্রিমো এইচ ডি দেবগৌড়ার পুত্র কুমারস্বামী। তার আগে, এদিন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে রাজধানীতে পৌঁছন তিনি।


সন্ধ্যেবেলা, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী ও ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করেন কুমারস্বামী। সেখানে সরকার গঠনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, জোট সরকারের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করতে সম্মত হয়েছে দুই দল।


জানা গিয়েছে, ওই সমন্বয় কমিটিতে ৬ সদস্য থাকবেন। এছাড়া, কর্নাটক বিধানসভার স্পিকার হবে কংগ্রেসের। পাশাপাশি, উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদও সম্ভবত কংগ্রেসকে দেওয়া হবে। মঙ্গলবার, সেই নিয় সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস হাইকমান্ড।


সূত্রের খবর, ২টি উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদের দাবি করেছে কংগ্রেস। কিন্তু, তাতে রাজি হননি কুমারস্বামী। জানা গিয়েছে, কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জি পরমেশ্বর উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।


এদিন রাহুল-সনিয়ার সঙ্গে প্রায় ২০ মিনিট বৈঠক করেন কুমারস্বামী। সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভার বিন্যাস নিয়ে এবং মন্ত্রিত্ব ভাগাভাগি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। বৈঠক হয় রাহুলের তুঘলক লেনের বাসভবনে।


সূত্রের খবর, বুধবার অল্প সংখ্যক মন্ত্রী শপথ নেবেন। পরে, মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করা হবে। এদিন, সমর্থনের জন্য সনিয়া ও রাহুলকে ধন্যবাদ জানান কুমারস্বামী। একইসঙ্গে, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণও জানান।


বৈঠক সেরে বেরিয়ে কুমারস্বামী দাবি করেন, আলোচনায় কোনও দর কষাকষি হয়নি। বলেন, আমি ওঁদের পরামর্শ নিতে এসেছি। ভীষণই আন্তরিকতা ও শান্তিপূর্ণভাবেই আলোচনা এগিয়েছে। আমরা একটি স্থিতিশীল সরকার গঠবন করব। এর জন্য একসঙ্গে কাজ করব। দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক তৈরি করব।


কুমারস্বামী জানান, এখনই মন্ত্রিত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বেঙ্গালুরুতে বৈঠক করবেন। সেখানে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হবে। দুই দলই এদিন অতীত ভুলে নতুন দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছে।


https://twitter.com/INCIndia/status/998560431810793472

এদিন ছিল রাজীব গাঁধীর মৃত্যুদিবস। রাজধানীতে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধাজানান কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেসের প্রতি সৌজন্য দেখিয়ে সোমবার রাজীব গাঁধীর মৃত্যুবার্ষিকীতে শপথ নেননি তিনি।


সূত্রের খবর,  কুমারস্বামীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মোদী বিরোধী জোটের প্রধান মুখগুলোকে দেখা যেতে পারে। জেডিএস সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভার একটি তালিকা কুমারস্বামী হাতে করে নিয়ে এলেও রাহুলের সঙ্গে আলোচনার পরে তা পরিবর্তন করা হতে পারে।


আপাতত কয়েকজনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অর্থ দফতর সামলাতে পারেন কুমারস্বামী। শপথ নিতে পারেন কংগ্রেসের ২০ ও জেডিএস-এর ১৩ জন মন্ত্রী।


এদিকে, রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার পর, শপথগ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবেন বলে দাবি করেছেন কুমারস্বামী। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমন্ত্রিত মায়াবতী, অখিলেশ যাদব, অন্ধপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওসহ বেশ কয়েকজন।


এর আগে, বিএসপি প্রধান মায়াবতীর সঙ্গেও বৈঠক করেন কুমারস্বামী। প্রসঙ্গত, কর্নাটক নির্বাচনে জেডিএস-এর সঙ্গে প্রাক-নির্বাচনী গাঁটছড়া বাঁধে জেডিএস। ফলাফল বের হওয়ার পরে, তারা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে। ফলে, নতুন সরকারে বিএসপি-কে কীভাবে জায়গা দেওয়া যায়, সেই নিয়ে মায়াবতী ও কুমারস্বামীর মধ্যে আলোচনা হয়।