চামরাজনগর: স্ত্রীর ইচ্ছে অনুযায়ী মন্দির তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন। পরে প্রয়াত স্ত্রীর মূর্তি গড়ে পুজোও করছেন স্বামী। স্ত্রীর মূর্তি স্থাপন না করা পর্যন্ত রাজু ওরফে রাজুস্বামীর কাছে মন্দির তৈরির কাজ সম্পূর্ণ ছিল না। তাই এখন মন্দিরের দেবদেবীর সঙ্গে স্ত্রীর মূর্তিরও নিত্যপুজো করেন তিনি। তাঁর কথায়, আমাদের ভালোবাসা ছিল স্বর্গীয়।
কর্নাটকের চামরাজনগর জেলার ইয়েল্লানদুর তালুকের কৃষ্ণপুর গ্রামের এই মন্দিরের কথা পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। আশেপাশের গ্রামের লোক এখানে এসে মন্দিরটির খোঁজ করেন।
২০০৬ সালে মন্দির তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়। গত ১২ বছর ধরে পেশায় কৃষক রাজু এখানে নিত্যপুজো করেন। রাজাম্মার মূর্তি রাজু গড়েছেন নিজের হাতেই। মন্দিরের চার দেবতা- শনিশ্বর, সিদ্দিপ্পাজী, নবগ্রহ ও শিবের সঙ্গেই রয়েছে রাজাম্মার মূর্তিও।
মন্দির তৈরির পিছনে রয়েছে একটা বড়সড় কাহিনী। রাজু নিজেই সেকথা জানিয়েছেন। ৩ একর জমির মালিক রাজু বলেছেন, বাবা-মার মতের বিরুদ্ধে গিয়েই তিনি তাঁর দিদির মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। এই বিয়ের বিরোধিতা করেননি তাঁর দিদি ও জামাইবাবু। সেজন্যই রাজাম্মাকে বিয়ে করতে পেরেছিলেন তিনি। বিয়ের কয়েকদিন পরেই স্ত্রী রাজুকে গ্রামে একটা মন্দির তৈরি করে দিতে বলেন। কিন্তু মন্দির তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই মারা যান রাজুর স্ত্রী।
এরপরই মন্দিরে স্ত্রীর মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত নেন রাজু। তাঁর কাছে ওই মন্দির হয়ে উঠেছে 'প্রেমের মন্দির'।
গ্রামের অনেকেই এর বিরোধিতা করেছিল। কেউ কেউ রাজুর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথাও বলেন।কিন্তু সিদ্ধান্ত থেকে টলানো যায়নি রাজুকে। তিনি বলেছেন, তাঁর স্ত্রী নিজের মৃত্যুর কথা আগাম জানিয়েছিলেন। রাজুর বিশ্বাস, তাঁর স্ত্রীর বিশেষ দৈবশক্তি ছিল। এই কারণেই তিনি মূর্তি গড়ে স্ত্রীর উপাসনা করছেন বলে জানিয়েছেন রাজু।