কর্ণাটক: হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের প্রতি ঘন্টায় দিতে হবে গৃহবন্দি থাকার প্রমাণ! করোনা আবহে এমনই নতুন নিয়ম জারি করল কর্ণাটক সরকার। বিদেশ বা অন্যান্য রাজ্য থেকে যাঁরা রাজ্যে ফিরেছেন, সামাজিক দূরত্ব তৈরির নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের সবাইকে থাকতে হচ্ছে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে বা নিজের বাড়িতেই গৃহবন্দি অবস্থায়। সেই নিয়ম যথাযথ পালিত হচ্ছে কিনা, তা জানাতে বলা হল সবাইকে।

কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালে রোজ ১৫ টা অর্থাৎ ১৪ দিনে ২১০ টি সেলফি পাঠাতে হবে সরকারকে। প্রতি ঘন্টায় পাঠাতে হবে একটি করে সেলফি। প্রতি ছবিতে উল্লেখ থাকতে হবে লোকেশন অর্থাৎ ছবি তোলার স্থানেরও।

সাংবাদিক সম্মেলনে কর্নাটকের চিকিৎসা শিক্ষা মন্ত্রী ডঃ কে সুধাকর জানানকেবলমাত্র ঘুমের সময় অর্থাৎ রাত ১০টা থেকে সকাল ৭টা অবধি সময় বাদ দিয়ে প্রতি ঘন্টায় নিজেদের একটি করে সেলফি পাঠাতে হবে সমস্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিকে। সবাই সঠিক তথ্য দিচ্ছে কি না ও সবাই নিয়মিত ছবি পোস্ট করছে কি না, সেদিকে নজর রাখার জন্যেও কাজ করবে বিশেষ দল।



রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেঙ্গালুরুতে তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের অফিসে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সরকারি সূত্রে খবরএই মুহূর্তে রাজ্যে ২৩,১৫২ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। তাঁরা সঠিকভাবে কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম পালন করছেন কি না তা দেখতে বাড়ি বাড়ি টহল দিয়ে বেড়াচ্ছেন সরকারী কর্মীরা। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী কর্ণাটকের  ২০০০০ বাড়ির ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে কর্মীদের হাতে। এর মধ্যে ১৪০০০ ঠিকানাই বেঙ্গালুরুর। কোয়ারেন্টাইনের আওতায় পড়া এই বাড়িগুলিতে নিয়মিত যাতায়াত করছেন কর্মীরা। কেবল আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিকে দেখা বা তাঁর ছবি তোলাই নয়প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে খোঁজ নিচ্ছেন যে তিনি দিনের কোনও সময় বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন কিনা। এই সমস্ত কাজে ও ঠিকানা খুঁজে পেতে ওইসব কর্মীদের সাহায্য করছেন কর্ণাটক পুলিশ।

তবে প্রতি ঘন্টায় সেলফি পাঠানোর এই নির্দেশিকা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বেশ কিছু প্রযুক্তিবিদের মতেএই পদ্ধতি অবলম্বন করতে গিয়ে অযথাই খরচ হয়ে যাবে প্রচুর ডাটা। দ্বিতীয়ত এই ছবিগুলি কত দিনের জন্য ও কী পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হবে, তা নিয়ে তৈরিহতে পারে ধোঁয়াশা। প্রশ্ন উঠেছে তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা নিয়েও। ইতিমধ্যেই অবশ্য কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি চালানোর জন্য ‘কোয়ারেন্টাইন ওয়াচ নামে একটি বিশেষ অ্যাপ্লিকেশন এনেছে কর্ণাটক সরকার। সমস্ত কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে হচ্ছে অ্যাপটি।