নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্ট কাঠুয়ায় ধর্ষিতা, খুন হওয়া নাবালিকার পরিবার, তাদের আইনজীবী ও মামলায় তাদের সাহায্য করা এক পারিবারিক বন্ধুর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে জম্মু ও কাশ্মীর সরকারকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এ এম খানবিলকর ও বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ সুরক্ষা সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়টি খতিয়ে দেখে অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ হিসাবে মেয়েটির পরিবার, তাদের আইনজীবী দীপিকা সিংহ রাজাওয়াত ও পারিবারিক বন্ধু তালিদ হুসেনের নিরাপত্তায় সাদা পোশাকের পুলিশের বন্দোবস্ত করতে বলে।

কাঠুয়া থেকে বিচার সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যৌন নির্যাতনের শিকার ৮ বছরের মেয়েটির বাবার আবেদনও বিবেচনার জন্য গ্রহণ করেছে সর্বোচ্চ আদালত। জম্মুতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা মাথাচাড়া দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বিচার চন্ডীগড়ে স্থানান্তরিত করার আর্জি জানালে শীর্ষ আদালত এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের মত জানতে চায়। ২৭ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন রাজ্যকে বক্তব্য জানাতে হবে। আজ শুনানির সময় মেয়েটির বাবা জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এপর্যন্ত যে তদন্ত চালিয়েছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে কয়েকটি মহলের তোলা সিবিআই তদন্তের দাবির বিরোধিতা করেন।

তিনি পুলিশি তদন্তে সন্তুষ্ট, এটা মাথায় রেখে বেঞ্চ বলেছে, এখন যেমন চলছে, তেমনই চলুক। আমরা এই পর্যায়ে মামলা সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার ব্যাপারে ঢুকতে চাইছে না।
বেঞ্চ এই মামলায় গ্রেফতার কিশোর অভিযুক্তকেও আইন মোতাবেক অবজারভেশন হোমে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে।

এর আগে এদিন বেঞ্চ সিনিয়র আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিংহের তোলা পিটিশনগুলির দ্রুত শুনানি করতে সম্মত হয়।

প্রসঙ্গত, নিম্ন আদালতে ধর্ষিতা নাবালিকার পরিবারের পক্ষে লড়া আইনজীবী রাজাওয়াত খুনের হুমকি পাচ্ছেন বলে জানিয়ে নিরাপত্তা চেয়ে নিজে থেকে একটি আবেদন পেশ করেছেন বলে প্রথমে শোনা যায়। পরে জানা যায়, মেয়েটির বাবাই পিটিশনটি দিয়েছেন, সিবিআই তদন্ত চেয়ে আরেকটি পিটিশন দিয়েছেন দিল্লির এক আইনজীবী।

কয়েকজন আইনজীবী শিশুকন্যার গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠায় গত ১৩ এপ্রিল তীব্র অসন্তোষ জানায় শীর্ষ আদালত, নিজে থেকেই একটি মামলা শুরু করে। সর্বোচ্চ আদালত বলে, এ ধরনের বাধাদানে ন্যয়বিচার প্রদানে বাধা দেয়, ন্যয়বিচার পাওয়ার পথেও অন্তরায় হয়ে ওঠে। নির্যাতিতা বা অভিযুক্ত, যার হয়েই তিনি মামলা লড়ুন, একজন আইনজীবীকে নিজের মক্কেলের হয়ে আদালতে হাজিরা দেওয়া থেকে কোনও বার অ্যাসোসিয়েশন বা অন্য আইনজীবীরা বাধা দিতে পারে না।