কোচি: ১৮ বছরের একটি ছেলে ও ১৯ বছরের একটি মেয়ের লিভ-ইন সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার আর্জি খারিজ করল কেরল হাইকোর্ট। এক ঐতিহাসিক রায়ে মেয়েটির বাবার পেশ করা হেবিয়াস কর্পাস পিটিশন খারিজ করে বিচারপতি ভি চিতম্বরেশ ও বিচারপতি কে পি যতীন্দ্রনাথের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, সমাজে এ ধরনের সম্পর্ক যে আকছার ঘটছে, এই বাস্তব সত্যকে অস্বীকার করা যায় না। এমন যুগলকে হেবিয়াস কর্পাস দিয়ে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। মেয়েটির বাবা পিটিশনে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর মেয়েকে অন্যায় ভাবে আটকে রেখেছে ছেলেটি। ছেলেটি ও মেয়েটি, দুজনেই মুসলিম, আলাপ্পুঝা জেলার।
মেয়েটি কিছুদিন ছেলেটির সঙ্গে সহবাস করেছে এবং সে প্রাপ্তবয়স্ক, এই দুটি বিষয় বিবেচনায় রেখে কেরল হাইকোর্টের বেঞ্চ তাকে ছেলেটির সঙ্গে থাকার অনুমতি দিয়েছে।

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টও রায় দেয়, বিয়ে না করেও প্রাপ্তবয়স্ক যুগলের একসঙ্গে থাকার অধিকার আছে। ২০ বছর বয়সি কেরলের একটি মেয়ের বিয়ে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাঁর পছন্দের জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের অধিকার আছে বলে জানিয়ে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
সুপ্রিম কোর্ট এও বলেছিল, লিভ ইন সম্পর্ককে এখন স্বীকৃতি দেয় আইনসভা এবং তা ২০০৫ এর গার্হস্থ্য হিংসা আইনে মহিলাদের সুরক্ষিত রাখার ধারাতেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তার বিয়ের বৈধ বয়স হয়নি, এহেন যুক্তিতে নন্দকুমার নামে এক যুবকের প্রেমিকা থুসারার সঙ্গে বিয়ে বাতিল করে দিয়েছিল কেরল হাইকোর্ট। তার বিরুদ্ধে নন্দকুমারের আবেদনের শুনানির সময় এই অভিমত জানায় শীর্ষ আদালত। প্রসঙ্গত, শিশু বিবাহ রোধ আইন অনুসারে, বয়স ১৮ বছর না হলে একটি মেয়ে ও ২১ না হলে একটি ছেলের বিয়ে হতে পারে না।
থুসারা নন্দকুমারের 'আইনে বৈধ বিবাহিত' স্ত্রী নয় বলে জানিয়ে তাকে তার বাবার হাতে তুলে দিতে বলেছিল হাইকোর্ট। কিন্তু বিচারপতি এ কে সিকরি ও বিচারপতি অশোক ভূষণকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের অভিমত ছিল, বিয়ের সময় নন্দকুমারের বয়স ২১ এর কম ছিল, স্রেফ এই কারণে ওদের বিয়ে 'বাতিল' বলে দেওয়া যায় না।
পাশাপাশি সর্বোচ্চ আদালত ব্যাখ্যা দিয়েছিল, দুজন সম্মতি দেওয়া প্রাপ্তবয়স্কের বিয়েতে আদালত নাক গলাতে পারে না, হেবিয়াস কর্পাস পিটিশনের ভিত্তিতে বিয়ে বাতিলও করতে পারে না।