তিরুঅনন্তপুরম: প্রেমিকের সঙ্গে সংসার করার ইচ্ছে ছিল। অভিযোগ, তাই নিজের ২ সন্তান ও বাবা মাকে ধীরে ধীরে বিষপ্রয়োগ করে মেরেছেন উত্তর কেরলের বাসিন্দা পিকে সৌম্যা নামে এক মহিলা। তাঁকে স্থানীয় আদালত ৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে।

সৌম্যার বাড়ি কান্নুরের পিনারায়ি গ্রামে। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর ২ মেয়ে নিয়ে বাবা মার সঙ্গে থাকতেন তিনি। গত ৫ বছর ধরে তিনি তাঁর ২ মেয়ে ও বাবা মাকে অল্প অল্প করে বিষ দিয়েছেন বলে অভিযোগ। এঁদের মধ্যে ৩ জন মারা গিয়েছেন শেষ ৪ মাসে। একইভাবে প্রত্যেকের মৃত্যু হওয়ায় স্থানীয় মানুষ সন্দিহান হয়ে পড়ে পুলিশে খবর দেন।

পুলিশ আদালত থেকে অনুমতি এনে কবর খুঁড়ে তুলে আনে একটি দেহ। ময়নাতদন্তে দেখা যায় অন্ত্রে অত্যন্ত বেশি পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে ওই পরিবারের ৪ জনের অজ্ঞাত অসুস্থতার জেরে মৃত্যু হয়। প্রত্যেকেই মারা যান বাড়িতে, পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ময়নাতদন্ত ছাড়াই কবর দেওয়া হয় দেহগুলি।

অস্বাভাবিক কিছু ঘটেছে সন্দেহে পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য সৌম্যাকে আটক করে পুলিশ। ৮ ঘণ্টা জেরার পর সৌম্যা স্বীকার করে নেন অপরাধের কথা, তখন গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম মারা যায় সৌম্যার ১ বছরের মেয়ে কীর্তনা, ২০১৩-য়। এ বছরের জানুয়ারিতে তার ৬ বছরের দিদি ঈশ্বরার মৃত্যু হয়। কিন্তু এরপরই পরপর মারা যান সৌম্যার মা ভি কমলা ও বাবা পিকে কুঞ্জিকান্নান। মা মারা যান ৭ মার্চ, বাবা ১৩ এপ্রিল। সব ক্ষেত্রেই লক্ষণ এক, বমি ও পেটের গোলমাল। এরপর সৌম্যাও একই কারণ দর্শিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ, তাদের দাবি, নিজের ওপর থেকে সন্দেহ সরাতেই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

সৌম্যা বলেছেন, ছোট মেয়ের মৃত্যুতে কারও সন্দেহ না হওয়ায় পরপর খুনের সাহস পেয়ে যান তিনি। ৬ বছরের ঈশ্বরা প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে তাঁকে দেখে ফেলে দাদু-দিদিমাকে বলে দেয়। তাই সকলকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।