সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে অবহিত কয়েকটি সূত্রে জানা গিয়েছে, কেইল এলাকায় সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির লঞ্চ প্যাডগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিল আর্মি ডিভিসন থেকে বাছাই করা পাঁচটি টিমকে। কেইল এলাকাটি কেল, দুধনিয়াল নামেও পরিচিত। গত ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বরের মাঝের রাতে সুচারু ঢঙে শুরু হওয়া অভিযানে ভারতীয় সেনা জওয়ানরা নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ৭০০ মিটার ভিতরে পাক সেনার চৌকির তদারকিতে থাকা চারটি লঞ্চ প্যাড ধ্বংস করে দেয়। সূত্রটি জানাচ্ছে, সন্ত্রাসবাদীরা ভারতীয় সেনার এমন অভিযানের ব্যাপারে আগাম কিছুই জানত না। ফলে চকিত হানায় তারা পুরোপুরি বিহ্বল, বিভ্রান্ত হয়ে যায়। ওদের মধ্যে লস্করের লোকজনই ছিল সংখ্যায় বেশি। ভীত, সন্ত্রস অবস্থায় তাদের পাকিস্তানি পোস্টের দিকে ছুটতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ভিতরে সফল অপারেশনের পর সেখানে জোরালো রেডিও মনিটরিং চালু হয়, কড়া নজরদারিও চলে। মনিটরিংয়ের মাধ্যমে আড়ি পেতে রেকর্ড করা পাক সেনার রেডিও বার্তায় জানা যায়, চারটি লঞ্চ প্যাডে একাধিক, সুসংহত সার্জিক্যাল হামলায় নিহত হয় অন্তত ১০ লস্কর সন্ত্রাসবাদী। ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত এলাকায় পাক সেনার যানবাহনগুলি আসা-যাওয়া করে। পড়ে থাকা নিহত সন্ত্রাসবাদীদের দেহগুলি তুলে সরিয়ে ফেলা হয়। নিলম উপত্যকায় নিহত জঙ্গিদের গণ কবর দেওয়া হয়েছে বলে রেডিও বার্তা বিশ্লেষণ করে জানা যায়।
পুঞ্চের উল্টোদিকে বালনোই এলাকায় সন্ত্রাসবাদীদের লঞ্চ প্যাডগুলিও ভেঙেচুরে ধ্বংস করে দেয় ভারতীয় সেনা। পাক সেনার রেডিও বার্তা খতিয়ে দেখে সেখানে ৯ জঙ্গির নিহত হওয়ার খবর মিলেছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি। ওখানে ভারতীয় সেনার অভিযানে ৮ নর্দার্ন লাইট ইনফ্যান্ট্রির দুজন পাক জওয়ানও নিহত হয় বলে তারা জানিয়েছে। তবে পরদিন সকাল সাড়ে আটটার পর পাক সংস্থাগুলির মধ্যে রেডিও, ওয়ারলেসে বার্তা বিনিময় একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।
সূত্রের খবর, কাশ্মীর, পাশাপাশি জম্মুতেও বিভিন্ন দিক থেকে সন্ত্রাসবাদীরা ঢোকার প্ল্যান করছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছিল। সন্ত্রাসবাদীরা কতক্ষণে এক জায়গায় জড়ো হবে, চূড়ান্ত অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে সেই অপেক্ষায় ছিল সেনাবাহিনী।
প্রসঙ্গত, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা স্বীকার করছে না পাকিস্তান। তাদের দাবি, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়ইনি, যা হয়েছে, সেটা নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারের গুলিবর্ষণ এবং তাতে তাদের দুজন সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। যদিও তাদের দাবির ফানুস ইতিমধ্যে ফুটো হয়ে গিয়েছে নানা সূত্রে পাওয়া তথ্যে।