নয়াদিল্লি: দিল্লির বুরারিতে একই পরিবারের ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে প্রথম থেকেই দানা বেঁধেছিল রহস্য। এবার ওই পরিবারের পোষা কুকুরটিও মারা গেল। নয়ডার এক পশু আশ্রয়শালায় মারা গেল কুকুরটি। পশুদের অধিকার আন্দোলনের এক কর্মী জানিয়েছেন, ‘মানসিক আঘাতে’র কারণেই কুকুরটি মারা গিয়েছে।

বাড়ির লোকজন কুকুরটির নাম দিয়েছিলেন টমি। পরিবারের সদস্যরা আত্মহত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। ওই সময় কুকুরটিকে গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিল।

নয়ডার ওই পশু আশ্রয়শালায় টমির যত্ন নিচ্ছিলেন সঞ্জয়মহাপাত্র নামে পশুদের অধিকার আন্দোলনের এক কর্মী। সাত বছরের বেশি বয়সের পোষা কুকুরটির শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্মণ দেখা গিয়েছিল। গত ১ জুলাই চান্দোয়াত পরিবারের ওই মর্মান্তিক ঘটনার পর গত কয়েকদিনে টমির ওজনও বেড়েছিল। গতকাল বিকেল চারটের সময় খাদ্য খায় সে। এরপর খেলে বেড়াচ্ছিল এবং আশ্রয়শালার এক কর্মী টমিকে নিয়ে বিকেল পাঁচটার দিকে বেড়াতে বেরিয়েছিলেন। ফিরে আসার পথে আশ্রয়শালার গেট পেরোতেই আচমকা মাটিতে পড়ে যায় সে। ভেতরে আনা হলে চিকিত্সক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

টমির মৃত্যুর খবর নয়ডা ও দিল্লি পুলিশকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহাপাত্র। চান্দোয়াত পরিবারের সবচেয়ে প্রবীণ সদস্যা নারায়ণ দেবীর নাতি প্রশান্ত সিংহ চান্দোয়াতকেও খবর দেওয়া হয়। প্রশান্ত কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। তাঁর পরিবারের লোকজন রাজস্থানের কোটাতে থাকেন।

উল্লেখ্য, নারায়ণ দেবীর দেহ মেঝেতে পাওয়া গিয়েছিল। বাকি দশজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

মহাপাত্র জানিয়েছেন, এদিন সকালে নয়ডার একটি জেলা হাসপাতালে টমির দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। টমি মানসিক আঘাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে বলে চিকিত্সকরা মত প্রকাশ করেছেন।

বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেলে প্রচারিত খবর থেকে টমির ব্যাপারে জানতে পেরেছিলেন মহাপাত্র। এরপর তিনি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে তিনি নয়ডার পশু আশ্রয়শালায় টমিকে নিয়ে আসেন। ইন্ডিয়ান পিট-বুল মিক্স প্রজাতির কুকুরটি খুবই আগ্রাসী  ছিল। কিন্তু আশ্রয়শালার কর্মীরদের আদর-যত্নে কুকুরটি ক্রমে সুস্থ হয়ে উঠছিল।

কিন্তু শেষরক্ষা হল না। বুরারির ওই পরিবারের মৃত্যুলীলার মূক ‘সাক্ষী’ও মৃত্যুর কোলেই ঢলে পড়ল।