লখনউ: উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী কে, সেই জল্পনার অবসান হল অবশেষে। শনিবার বিকালে মুখ্যমন্ত্রী বাছতে বৈঠকে বসে বিজেপি পরিষদীয় দল। সূত্রের খবর, ধ্বনিভোটে সর্বসম্মতিক্রমে যোগী আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য বেছে নেন বিধায়করা। আগামীকাল বিকেলে শপথ গ্রহণ। সেখানে হাজির থাকার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।


সূত্রের খবর, সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসাবে অনেকটাই পাল্লা ভারী ছিল গোরক্ষপুরের বিজেপি সাংসদের। তিনিই নাকি প্রথম পছন্দ ছিলেন বিধায়কদের একটা বড় অংশের। কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী মনোজ সিংহের নাম আগে শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত দৌড়ে তিনি থাকতে পারেননি।গাজিপুরের এমপি-কে একটা অংশ চাইছিলেন তাঁর সাংগঠনিক অভিজ্ঞতার সুবাদে। কিন্তু এও শোনা যাচ্ছিল, আরএসএস তাঁকে চাইছে না।

শোনা যাচ্ছে, আদিত্য়নাথের ডেপুটি হতে চলেছেন কেশব প্রসাদ মৌর্য ও  দীনেশ শর্মা। এও শোনা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশে এবার দুজনকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হচ্ছে।



এদিন লখনউয়ে বিজেপি দপ্তরের বাইরে রীতিমতো আদিত্যনাথ ও কেশব প্রসাদ মৌর্যের সমর্থকরা নিজ নিজ নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর দাবিতে ধরনা দেন।  বৈঠক শুরুর মুখে স্পষ্ট হয়ে যায়, আদিত্যনাথই শেষ হাসি হাসছেন। সংখ্যালঘু-দলিত ভোটবাক্সের কথা  মাথায় রেখে ওবিসি প্রতিনিধি মৌর্যের কথাও ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু আদিত্যনাথের অনুগামীদের চাপের কাছে শেষ পর্যন্ত  বাদ দিতে হল মৌর্যকে। আদিত্যনাথ পন্থীরা রীতিমতো তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে হবে বলে দাবি তুলে পোস্টার মারে, স্লোগান দেয়। তাদের বক্তব্য, বিজেপি রাজ্যে এতগুলি আসন জিতেছে আদিত্যনাথের জন্যই। দৌড়ে থাকা কারও বিরোধিতা করছি না, তবে আমরা চাই, মুখ্যমন্ত্রী করা হোক আদিত্যনাথজিকেই।

বৈঠকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু ও বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব। বৈঠকের পর বেঙ্কাইয়া জানান, আটবারের এমএলএ সুরেশ খন্না প্রস্তাব করেন আদিত্যনাথের নাম, সমর্থন করেন দশজন। এরপর বেঙ্কাইয়া ৩১২ জন বিধায়কের কাছে জানতে চান, অন্য  কোনও নাম তাঁরা প্রস্তাব করবেন কিনা।  কিন্তু সবাই আদিত্য়নাথের প্রতিই সমর্থন জানান। তিনি রাজ্যের ২১-তম মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন।

রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় কট্টর হিন্দুত্ববাদের পালে হাওয়া লাগবে, তবে বিজেপির বিরুদ্ধেও বিরোধীরা সুর চড়ানোর হাতিয়ার পেয়ে যাবে।  এও শোনা যাচ্ছিল, বিজেপি নেতৃত্ব হিসাব কষে এমন একজনকেই হিন্দি বলয়ের সবচেয়ে গুুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে চায় যা ২০১৯-এর সাধারণ নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতায় ফিরতে  সাহায্য করবে।

বিজেপি সদ্য হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে  ৪০৩টির মধ্যে ৩২৫টি আসন দখল করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় এসেছে উত্তরপ্রদেশে। ম্লান হয়ে  গিয়েছে অখিলেশ, রাহুলের সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেস জোট, মায়াবতীর দল।