নয়াদিল্লি: দেশের অন্যতম বড় রাজ্য বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যরাজনীতিতে চলছে যোগ-বিয়োগের অঙ্ক। নির্বাচনী রণাঙ্গনে পূর্ণশক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। একইসঙ্গে দ্রুত বদলে যাচ্ছে রাজনৈতিক ঘটনাক্রম, সমীকরণ। এরইমধ্যে জাতীয় স্তরে এনডিএ-তে থেকেই বিহারে আলাদা লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিজেপির বিরুদ্ধে তারা প্রার্থী দেবে না। কিন্তু জেডি(ইউ)-র বিরুদ্ধে তারা লড়াই করবে। অন্যদিকে, বিরোধী জোট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে ভিআইপি। একেবারে শেষমুহূর্তে এভাবে সমীকরণ বদলে যাওয়ায় নতুন করে হিসেব-নিকেশ চলছে বিভিন্ন শিবিরে। বিশ্লেষণ চলছে, এলজেপি ও ভিআইপি-নিজের নিজের জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসায় কার লাভ, কার ক্ষতি।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলজেপি-র বিহারে শাসক জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়বে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জেডি(ইউ)। বেশ কয়েকটি আসনে নীতীশের দলের পাটিগণিত এলোমেলো করে দিতে পারে চিরাগ পাসোয়ানের নেতৃত্বাধীন দল।
উল্লেখ্য, ২০০৫-এ ঠিক একইভাবে লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি-র পথে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছিল এলজেপি। ওই সময় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ-র শরিক ছিল এলজেপি। ২০০৫-এর ফেব্রুয়ারি ইউপিএ-র শরিক থাকা অবস্থাতেই বিহার বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডি-র বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল এলজেপি। আরজেডি-ও ছিল ইউপিএ-র শরিক।
২০১৫-তে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে এলজেপি ৪২ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। কিন্তু জয় পেয়েছিল মাত্র দুটি আসনে। ২০১৫-তে লালুপ্রসাদের সঙ্গে জোট বেঁধে এনডিএ-র বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন নীতীশ।
একদিকে, এলজেপি যেমন জেডি(ইউ)-কে অস্বস্তিতে ফেলেছে, তেমনই ভিআইপি বিরোধী মহাজোটের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাজোট থেকে বেরিয়ে আসার পর ভিআইপি জানিয়েছে, তারা সব কটি আসনে লড়াই করবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,ভিআইপি-র এই সিদ্ধান্তে পরোক্ষভাবে বিজেডি-জেডি(ইউ) লাভবান হবে। কারণ, ভিআইপি আলাদাভাবে ভোটে লড়ায় আরজেডির পশ্চাদপদ শ্রেণীর ভোট ভাগ হয়ে যাবে। এনডিএ এর ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করবে।
সাংবাদিক বৈঠকের মধ্যেই মহাজোট ছেড়ে বেরিয়ে আসার ঘোষণা করেছিলেন ভিআইপি-র মুকেশ সাইনি। তিনি আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। মুকেশের অভিযোগ, তেজস্বী কানহাইয়া, চিরাগ ও তাঁর মতো তরুণ নেতাদের ভয় পান। এমনকি তেজস্বী তাঁর দাদা তেজপ্রতাপকেও ভয় পান।