নয়াদিল্লি: এসেছিলেন রাহুল গাঁধীর ভাষণ শুনতে। ভাষণ শেষ। আর কী প্রয়োজন থাকার! সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির দিকে হাঁটা। তবে খালি হাতে নয়, তাঁদের বসার জন্য কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যে খাটগুলি নিয়ে আসা হয়েছিল, সেগুলি মাথায় তুলে নিয়ে চলে গেলেন স্থানীয় লোকজন। চোখের নিমেষে হাওয়া দু হাজার সদ্য কিনে আনা খাট। এমনকী কে কটা নেবে, তা নিয়ে কাড়াকাড়িও হয়। হাতাহাতি, মারামারি করতেও দেখা যায় অনেককে। উত্তরপ্রদেশে আগামী বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে দেওরিয়ার রুদ্রপুরে কংগ্রেস সহ সভাপতির জনসংযোগ তৈরির লক্ষ্যে নেওয়া ‘খাটসভা’ কর্মসূচির এমনই পরিণতি হল শেষ পর্যন্ত, কংগ্রেসের পক্ষে যা মোটেই স্বস্তির কথা নয়।


শুরু হয়েছিল রাহুলের অনুষ্ঠান স্থলের পাশে অস্থায়ী তাঁবুতে রাখা খাবার-দাবার, জলের বোতল ছিনতাই দিয়ে। তারপরই কাঠ-দড়ি দিয়ে তৈরি খাটিয়া তুলে হাঁটা দেওয়া শুরু। শেষে দেখা যায়, মাঠে এদিক ওদিক পড়ে আছে লোহার তৈরি কিছু খাট। সেগুলি ওজনে খুব ভারী বলে কেউ তুলে নেয়নি।

প্রায় ৪ হাজার খাট কেনা হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। একেকটির দাম ৭৫০-৮০০ টাকা।

উত্তরপ্রদেশে খাটে বসে আরাম করে গ্রামের মাথাদের সভা করার চল আছে। সেই রীতিকেই হাতিয়ার করে কৃষকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা রাহুলের।আজ সকালের সেই খাট-সভা দিয়েই দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যটিতে মাসখানেকের জনসংযোগ অভিযানের সূচনা করলেন রাহুল।

প্রত্যাশিত ভাবেই রাহুলের নিশানা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বিরুদ্ধে কৃষকদের কথা ভুলে যাওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।বলেন, মোদীজি চাষিদের নিয়ে অনেক কথা বলেছেন।কীভাবে ওদের সাহায্য করতে চান, বলেছেন তাও। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর ওদের ভুলেই গিয়েছেন।

এদিন পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়া থেকে ২৫০০ কিমি পদযাত্রায় নামলেন তিনি। রাজ্যের ৪০৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের ২২৩টি কভার হবে এই পদযাত্রায়।গ্রামে গ্রামে হাজির হয়ে রাহুল চাষিদের কথা শুনবেন বলে জানা গিয়েছে। পাশপাশি রোড শো-ও করবেন তিনি।

রাজনৈতিক মহলের খবর, নরেন্দ্র মোদী যেমন ‘চায়ে পে চর্চা’ কর্মসূচি নিয়েছিলেন ২০১৪-র সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে, ঠিক তেমনই রাহুল খাট সভা কর্মসূচি। ‘চায়ে পে চর্চা’র আইডিয়া যাঁর মাথা থেকে বেরিয়েছিল, সেই নির্বাচনী কৌশল রচনাকার প্রশান্ত কিশোরই ‘খাট সভা’-র ভাবনা দিয়েছেন।মোদীর বেলায় কাজে দিয়েছিল চায়ে পে চর্চা, খাট সভা কি তেমনই সাফল্য দেবে?