নয়াদিল্লি: লোকসভায় আজও সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে কোনও বিতর্ক হতে পারল না। নানা ইস্যুতে বিক্ষোভের মধ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে লোকসভা দিনের মতো মুলতুবী ঘোষণা করে দিলেন সুমিত্রা মহাজন। অনাস্থা প্রস্তাব আনার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যের সমর্থন যে তাদের রয়েছে, তা তুলে ধরতে কংগ্রেস, বাম ও অন্যান্য কয়েকটি দলের সাংসদদের নীল রঙের প্ল্যাকার্ড তুলে ধরতে দেখা যায়। ওই প্ল্যাকার্ডগুলিতে লেখা একটি করে সংখ্যা এবং অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য। ১ থেকে ৮০ পর্যন্ত লেখা প্ল্যাকার্ড বিরোধী সদস্যের হাতে দেখা যায়। উল্লেখ্য, অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিশ আনার জন্য কমপক্ষে ৫০ জন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন।
এদিন শূন্য পর্বের শুরুতেই কাবেরী জলবন্টন ইস্যুতে তুলে শোরগোল শুরু করেন এআইএডিএমকে সাংসদরা। অন্য বিরোধী দলগুলি অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার দাবি জানায়।
অধ্যক্ষ বলেন, অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিশ তিনি পেয়েছেন। ওই নোটিশগুলি সংসদের আলোচনার জন্য তুলে ধরতে চান তিনি। কিন্তু সভার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে অনাস্থা প্রস্তাব স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অধ্যক্ষ বিক্ষোভকারী সদস্যদের নিজ নিজ আসনে ফিরে যাওয়ার অনুরোধও করেন। এরইমধ্যে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্ত কুমারকে বলতে শোনা যায়, সরকার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু সভার কাজ না চলার দায় তিনি কংগ্রেসের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন। পাল্টা কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে সরকারকেই কাঠগড়ায় তোলেন।
পরে খাড়্গে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন, সভায় সরকারের মদতে বিক্ষোভ চলছে। অনাস্থা প্রস্তাব যাতে তোলা না যায়, সেজন্য সরকার এআইএডিএমকে সদস্যদের বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে উস্কানি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। আগামীকালও ফের তাঁরা এই প্রস্তাব আনবেন বলে জানিয়েছেন খাড়্গে।


এর আগে এদিন নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে কংগ্রেস তার সব লোকসভা সাংসদের হুইপ জারি করে। তাঁদের সকলকে আজ সংসদে হাজির থাকার নির্দেশ দেয়। এর আগে টিডিপি ও ওয়াইএসআর কংগ্রেস মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চায়।

সংসদের কাজকর্ম হতে না পারায় এর আগে আনা অনাস্থা প্রস্তাবগুলি নিয়ে আলোচনাই হতে পারেনি। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী অভিযোগ করেছেন, সরকার ভয় পেয়েছে, তাই গত ১০ দিন ধরে ইচ্ছে করে অবিশ্বাস প্রস্তাবের ওপর কার্যক্রম হতে দেয়নি তারা।

এর মধ্যে ওয়াইএসআর কংগ্রেস ঠিক করেছে, অন্ধ্রপ্রদেশকে বিশেষ রাজ্যের স্বীকৃতি না দিয়েই যদি এবারের অধিবেশন শেষ হয়ে যায়, তবে তাদের সব সাংসদ সংসদ থেকে ইস্তফা দেবেন। ওয়াইএসআর কংগ্রেস ও টিডিপির বক্তব্য, ২০১৪-য় অন্ধ্র ভাগের সময় কেন্দ্র অবশিষ্ট অন্ধ্রকে বিশেষ রাজ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি এখন তারা রাখছে না। এই অভিযোগে এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে টিডিপি। লোকসভায় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থাও আনে তারা। কিন্তু এডিএমকে সাংসদরা হল্লা করায় সেই প্রস্তাব পেশ হতে পারেনি।

বিভিন্ন দলের সাংসদদের নানা ইস্যুতে হট্টগোলের জেরে টানা ১৬ দিন অচল রয়েছে সংসদ। যদিও এরই মধ্যে সরকার পাশ করিয়ে নিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিল।