নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের তথ্যের অধিকার আইন সংশোধনের উদ্যোগের বিরুদ্ধে সরব বিরোধী নেতারা। কেন্দ্রের মোদি সরকারের পেশ করা তথ্যের অধিকার আইন (সংশোধনী) বিল, ২০১৯ এর তীব্র নিন্দা করে তাঁদের অভিমত, এটা স্বচ্ছতা রক্ষাকারী তথ্য কমিশনের ওপর আক্রমণ। লোকসভায় সোমবার বিরোধীদের প্রবল আপত্তির মধ্যেই বিলটি পাশ হয়। সরকার তথ্য অধিকার সংক্রান্ত প্যানেলকে ‘নখদন্তহীন বাঘে’ পরিণত করতেই বিলটি এনেছে বলে অভিযোগ করে বিরোধীরা। তথ্য কমিশনারদের নির্বাচন কমিশনারদের সমান মর্যাদা দেওয়া হয়। বিলে সেই মর্যাদা কমানো হয়েছে বলে অভিযোগ। বিল অনুযায়ী তথ্য কমিশনারদের বেতন, চাকরির শর্ত, মেয়াদ সরকার ঠিক করে দেবে।
সরকারের তরফে অবশ্য বিলটি তথ্য আইন লঘু করবে, বিরোধীদের এহেন অভিযোগ খারিজ করে বলা হয়, তারা তথ্য কমিশনের স্বাধিকার ও স্বচ্ছতা রক্ষায় দায়বদ্ধ। বিলের ওপর বিতর্কের জবাবে কেন্দ্রীয় কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলেন, বিলের উদ্দেশ্য এই আইনকে প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা দেওয়া, সচল করা, তার সফল রূপায়ণ ঘটানো। মন্ত্রী বিলটি বিবেচনা করে সমর্থন চাইলে বসপা, তৃণমূল সহ একাধিক বিরোধী সাংসদ তার বিরোধিতা করে ভোটাভুটি চায়। বিলটি ধ্বনিভোটে গৃহীত হয়। পক্ষে ২১৮টি, বিপক্ষে ৭৯ ভোট পড়ে। বিরোধী কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরি বিল সম্পর্কে একটি ব্যাখ্যা চাইলে স্পিকার অনুমতি দেননি। ক্ষোভে বিরোধীরা সভা থেকে ওয়াকআউট করেন।
বিরোধীরা বিলটিকে ‘আরটিআই নির্মূল বিল’ আখ্যা দিয়ে দাবি করে, সেটি আরও পরীক্ষার জন্য সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হোক। রাজ্যসভায় সরকারের প্রয়োজনীয় শক্তি না থাকায় বিলটি রুখে দেওয়া যাবে বলে আশাবাদী তারা।
বিরোধীদের তরফে কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর সওয়াল করেন, প্রস্তাবিত বিল অনুসারে, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তথ্য কমিশনারদের ইচ্ছামতো নিয়োগ, বরখাস্ত করতে পারে সরকার। এটা সংশোধনী বিল নয়, খতমকারী বিল। দেশের গণতন্ত্রের কাছে তথ্যের অধিকার ছিল এক বিরাট বড় সাফল্যপ্রাপ্তি, সরকারের কায়েমী স্বার্থকে তা চ্যালেঞ্জ করেছিল।
এদিন রাজনৈতিক কর্মীরা রাজধানীর রাস্তায় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। সংবেদনশীল নথি, তথ্য প্রকাশ্যে আনার বিধি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেই তথ্য অধিকার আইন সংশোধনে বিল পেশ করা হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। গত শুক্রবার সংসদে বিলটি পেশ হয়।