নয়াদিল্লি ও কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমান-বিভ্রাটের ঘটনায় ৬ পাইলটের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ।


জানা গিয়েছে, ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা বিমান চালাতে পারবেন না। ৬ জনের মধ্যে ২ জন হলেন ইন্ডিগোর সেই বিমানের পাইলট, যে বিমানে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি চালকরা হলেন এয়ার ইন্ডিয়া ও স্পাইসজেট সংস্থার।


কম জ্বালানির কথা বলে ৬ পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে (এটিসি) ভুল তথ্য দেয় বলে ডিজিসিএ সূত্রে খবর। এই অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর বিমানের পাইলট ছাড়াও আরও ২টি বিমান সংস্থার মোট ৬ জন পাইলটের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।


ডিজিসিএ খতিয়ে দেখছে, কী করে একইসঙ্গে তিনটি বিমানে জ্বালানি কম গেল। তদন্তকারীদের দাবি, বিমানে জ্বালানি কম থাকার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, বিমানে এতটাই জ্বালানি ভরা থাকে যাতে তারা অনায়াসে ৩০-৪০ মিনিট এইভাবে অবতরণের আগে চক্কর কাটতে পারে।


তাছাড়া, বিমান চালকদের নির্দেশ দেওয়া থাকে, কোনও সমস্যা হলে, বিমানকে নিকটবর্তী বিমানবন্দরে (এক্ষেত্রে ভূবনেশ্বর) অবতরণ করানো।


এদিকে, উড়ান সংস্থা ইন্ডিগোর দাবি, তাদের পাইলট ভুল তথ্য দেননি। তবে ডিজিসিএ-র নির্দেশ তারা মানবে। এয়ার ইন্ডিয়াও ডিজিসিএ-র নির্দেশ মানবে বলে জানিয়েছে। উড়ান সংস্থা স্পাইস জেটের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।


গত ৩০ নভেম্বর পটনার সভায় যোগ দিয়ে কলকাতায় ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান-বিভ্রাটের ঘটনা ঘটে। যে বিমানে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, সেই ইন্ডিগোর ৬ই-৩৪২ বিমান রানওয়েতে নামার আগে, প্রায় আধঘণ্টা ধরে আকাশে চক্কর কাটে।


অভিযোগ, চক্কর কাটতে কাটতে এটিসি-কে কম জ্বালানির বিষয়টি জানান পাইলট। যা নিয়ে তড়িঘড়ি রানওয়েতে দমকলের ব্যবস্থা রাখা হয়। একইসঙ্গে, আরও দুই বিমানও কম জ্বালানি থাকার দাবি করে।


যদিও, জ্বালানি কম থাকার অভিযোগ মানতে চায়নি ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়ে দেয়, কলকাতা বিমানবন্দরে একসঙ্গে বহু বিমান ওঠানামা করায় সাময়িক বাতিল হয়েছে। যা বহুক্ষেত্রেই হয় বলে দাবি করে সংস্থা।


এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদ। মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগও তোলা হয়। এই মর্মে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী অশোক গজপতি রাজুকে চিঠি লেখেন মুকুল রায়।


তৃণমূল কংগ্রেসের চাপের মুখে তদন্ত শুরু হয়। এরপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ‘এক সপ্তাহ’ কাজে যোগ দিতে পারবেন না সেদিন চালকের আসনে থাকা দুই পাইলট। ৬ জনকে পুনরায় ‘সংশোধনমূলক প্রশিক্ষণে’ পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।