গুয়াহাটি: স্রেফ দেখার ভুল, আর তার জন্যই মাশুল গুণতে হল আম নাগরিককে। ২০১৬ সালে ট্রাইবুনাল মধুমালা দাসকে ‘বিদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল এবং তাকে অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মতো পুলিশও উল্লেখিত মহিলাকে আটক করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়।  তিন বছর পর জানা গেল, মধুমালা দাসের পরিবর্তে মধুবালা মন্ডলকে আটক করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। ‘বিদেশি’ পরিচয়ে যাকে আটক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেই মধুমালা দাস ট্রাইবুনালের রায়ের অনেক আগেই গত হয়েছেন। এমনকি বেঁচে নেই তার স্বামী মাখন দাসও। দাস পরিবার থেকেই জানানো হয়, তাদের পরিবারের এই দুই সদস্য ২০১৬ সালের ট্রাইবুনালের রায়ের অনেক আগেই মারা গিয়েছেন।


প্রসঙ্গত, ৫৯ বছরের মধুবালা মন্ডলের বিষয়টি নজরে আসতেই তড়িঘরি তদন্ত শুরু করে চিরাং জেলার সুপারিনটেনডেন্ট সুধাকর সিংহ। তদন্তে জানা যায়, পরিচয়ের ভুলে মধুমালা দাসের পরিবর্তে মধুবালা মন্ডলকে আটক করা হয়েছে এবং ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাচক্রে ২ জনই চিরাং জেলার বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা। সত্য উদঘাটনের পরই গোটা বিষয়টি চিরাং জেলার ফরেন ট্রাইবুনালের কাছে উপস্থাপন করেন পুলিশ অধিকর্তা সুধাকর সিংহ। ২৫ জুন ট্রাইবুনাল একটি নির্দেশিকা দিয়ে জানায়, মধুবালা মন্ডলকে ওই ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে সসম্মানে পরিবারের হাতে তুলে দিতে হবে। বৃহস্পতিবার মধুবালা মন্ডলকে কোকরাঝড়ের অবৈধ অভিবাসী ক্যাম্প থেকে মুক্তি দিয়ে তার মেয়ের হাতে তুলে দিল অসম পুলিশ।


সম্প্রতি এমন আরও একটি ঘটনা সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এসেছে। যা নিয়ে গোটা দেশেই শোরগোল পড়ে যায়। কার্গিল যুদ্ধের সেনা মহম্মদ সানাউল্লাহকেও বিদেশী ভেবে গোয়ালপাড়ার ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তাঁর পরিবার গুয়াহাটি আদালতে পিটিশন দিয়ে মহম্মদ সানাউল্লাহকে জামিনে মুক্ত করে।


উল্লেখ্য, বুধবারই অসমের নাগরিক পঞ্জীকরণ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে লক্ষাধিক মানুষকে। তার ঠিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে মুক্তি পেলেন স্বামীহারা মধুবালা মন্ডল।