উজ্জৈন: দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা আজ কোন জায়গায়? কীভাবে মোকাবিলা হচ্ছে মারণ রোগের? মধ্যপ্রদেশের উজ্জৈনে ৫৫ বছরের রোগিণীর মৃত্যু ফের একবার সামনে নিয়ে এল দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার কঙ্কালসার চেহারা। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের স্যুইচ অনই করতে পারলেন না বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী। যার খেসারত রোগীকে দিতে হল বেঘোরে প্রাণ হারিয়ে।


বৃহস্পতিবার প্রবল শ্বাসকষ্ট ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ে উজ্জৈনের জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বছর পঞ্চান্নর ওই রোগী। তাঁর সোয়াপ পরীক্ষাও হয়। এরপর রোগীর অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন, রোগীকে স্থানান্তরিত করা হবে মাধবনগরের হাসপাতালে। প্রসঙ্গত,  কোভিড-১৯-এর চিকিৎসার জন্য মধ্যপ্রদেশ সরকার ওই হাসপাতালে বিশেষ পরিষেবার বন্দোবস্ত করেছে। কিন্তু রোগীর অবস্থা এতটাই আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে যে তাঁকে মাধবনগরে নিয়ে যাওয়ার মতো ঝুঁকিও চিকিৎসরা নেননি। রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় আরডি গর্ডি মেডিক্যাল কলেজ নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।


এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ই স্বাস্থ্যকর্মী দেখেন অ্যাম্বুলেন্সের আইসিইউ তালা বন্ধ। এমনকি কোনও চিকিৎসকও সেসময় অ্যাম্বুলেন্সে উপস্থিত ছিলেন না। বিলম্ব হচ্ছে দেখে স্বাস্থ্যকর্মী তালা ভেঙে আইসিইউ পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই রাস্তায়ই প্রাণ হারান রোগী। চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচাতে পারেননি।


উজ্জৈনের চিফ মেডিক্যাল অফিসার অনুসূয়া গাওলি জানিয়েছেন, “মৃত রোগী উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবিটিসের মতো রোগে ভুগছিলেন। তাঁকে মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। স্পেশালিস্ট চিকিৎসকরা তাঁর নমুনা পরীক্ষা করার জন্য সংগ্রহ করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু রোগীর অবস্থা ক্রমাগত অবনতির দিকে যাচ্ছিল এবং শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এই ঘটনার তদন্ত হবে।” উল্লেখ্য, এই ঘটনায় যেহেতু মৃত রোগীকে ভেন্টিলেটর দেওয়া হয়নি সেকারণে পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন মাধবনগর হাসপাতালের ইনচার্জ এবং আরও একজন সিনিয়র ডাক্তার। তবে এই মহিলা করোনা পজিটিভ কিনা, তা এখনও জানা যায়নি। রিপোর্ট এলেই সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।