চেন্নাই: তামিলনাড়ুর সর্বত্র সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, সরকারি অফিস, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও শিল্প সংস্থায় বন্দেমাতরম গাওয়া বাধ্যতামূলক হল। মাদ্রাজ হাইকোর্টের নির্দেশ, সোমবার ও শুক্রবার, সপ্তাহে অন্তত দুবার স্কুলে বন্দেমাতরম গাইতেই হবে, অফিসে মাসে একবার গাইতে হবে। এই নির্দেশ জারি করলেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি এম ভি মুরলীধরন।


তিনি বলেছেন, রাজ্যের স্কুলে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের বন্দেমাতরম গাওয়া সুনিশ্চিত করা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হবে। বিচারপতির অভিমত, বাংলা বা সংস্কৃতে বন্দেমাতরম গাইতে অসুবিধা হলে তামিলে অনুবাদ করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

অবশ্য একইসঙ্গে বিচারপতি এও জানিয়েছেন, কোনও ব্যক্তি বা সংগঠনের বন্দেমাতরম গাওয়া বা বাজানোয় সমস্যা হলে এবং যদি তার পিছনে বৈধ কারণ থাকে, তবে তা গাইতে বা বাজাতে তাকে জোর করা বা বাধ্য করা যাবে না।

বিচারপতি বলেন, বর্তমান যুব প্রজন্ম দেশের ভবিষ্যত্। আদালত আশা করে, এদিনের নির্দেশ সঠিক মানসিকতার সঙ্গেই গ্রহণ করে অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে এই মহান দেশের নাগরিকরা।
জনৈক কে বীরামনি বিটি অ্যাসিস্ট্যান্ট পদের লিখিত পরীক্ষায় পাশ করতে না পেরে মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সে ব্যাপারেই এদিনের রায় আদালতের।

বীরামনির বক্তব্য, তিনি পরীক্ষায় বন্দেমাতরম বাংলায় রচিত হয়েছে বলে উত্তরে লিখেছিলেন। বোর্ড উত্তরটি ভুল বলে জানিয়ে তাঁকে ৮৯ নম্বর দেয়, যেখানে ওই পদে যোগ্য বিবেচিত হওয়ার জন্য ন্যূনতম ৯০ নম্বর পেতে হত।

বীরামনির দাবি, তিনি এমন অনেক বই পড়েছেন, যেখানে স্পষ্ট বলা ছিল, বন্দেমাতরম প্রথমে বাংলায় লেখা হয়েছে। সুতরাং বোর্ড তাঁর উত্তরটিকে সঠিক বলে ধরে তাঁকে প্রাপ্য নম্বর দিক। বন্দেমাতরম আগে সংস্কৃতে লেখা হয়েছে, বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত ভুল এবং ওদের ভুলের জন্যই তিনি চাকরির সুযোগ পাননি।

যদিও তাঁর দাবির বিরোধিতা করে সরকারি কৌঁসুলি সওয়াল করেন, বন্দেমাতরম প্রথমে সংস্কৃতে লেখা হয়, পরে তা অনুদিত হয় বাংলায়।

এ ব্যাপারে বিভ্রান্তি কাটাতে বিচারপতি অ্যাডভোকেট জেনারেলকে সঠিক উত্তর জেনে এসে জানাতে বলেন। গত ১৩ জুলাই শুনানির জন্য বিষয়টি উঠলে অ্যাডভোকেট জেনারেল সাফাই দেন, বন্দেমাতরম প্রথমে সংস্কৃতেই লেখা হয়, তবে বাংলা হরফে।

বিচারপতি বীরামনিকে শিক্ষক বাছাই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভূক্ত করতে সরকারকে নির্দেশ দেন।