নোট বাতিল: সরকার দেশের মানুষকে ভিখিরি বানিয়ে ছেড়েছে, কেন্দ্রকে তোপ মমতার
ABP Ananda, web desk | 15 Nov 2016 03:15 PM (IST)
কলকাতা:৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফের মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে তিনি বলেছেন, এই সরকার দেশের মানুষকে ভিখিরি বানিয়েছে। এদিন দিল্লি যাওয়ার আগে আক্রমণাত্মক মমতা বলেছেন, অন্য দলগুলি না গেলেও তিনি আগামীকাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত্ করবেন। তিনি বলেছেন, নোট বাতিল ইস্যুতে আগামীকাল আমি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করব। আমার ৪০ জন সাংসদ নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করব। আমি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছি। রাহুল গাঁধী, নীতীশ কুমার, নবীন পট্টানায়েক, মুলায়ম সিংহ যাদব, অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা যদি আমার সঙ্গে যোগ দেন তো ভালো। যদি তাঁরা না আসেন, তাহলে আমি আমার সাংসদদের সঙ্গে নিয়ে যাব। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা আমার সঙ্গে থাকতে পারেন। উল্লেখ্য, বেশ কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দল এখনই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছুক নয়। ওই দলগুলি প্রথমে সংসদে আলোচনার কথা বলেছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মমতা বলেন, এটা তাদের মত। রোগী বেঁচে থাকার আগে ডাক্তার ডাকতে হয়। রোগী মরে যাওয়ার পর ডাক্তার ডেকে কোনও লাভ নেই। এখনই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করা উচিত। আমি চাই, সব দলগুলি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করুক। আমি পিছনে দাঁড়াতে রাজি। অন্যরা নেতৃত্ব দিক। কিন্ত রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করা উচিত। উল্লেখ্য, নোট বাতিল ইস্যুতে বিজেপি বিরোধী রাজনীতির ক্ষেত্রে মমতা সমস্ত বিরোধী দলগুলিকে একজোট করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু সিপিএম সেই ডাকে সরাসরি সাড়া দেয়নি। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, সংসদে সরকার নোট বাতিল ইস্যুতে সরকার কী অবস্থান নেয় এবং কে কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, তা আগে দেখতে হবে। কিন্তু মমতা এরপরও নোট বাতিল ইস্যুতে সরকার বিরোধিতায় চড়া সুর এতটুকু নামাতে নারাজ। এদিন বলেছেন, দেশে এমনও বহু জায়গা রয়েছে যেখানে ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিস নেই। সেখান মানুষ কী করবেন? নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে দেশের বহু মানুষকে ভিখিরি বানিয়ে দিয়েছে। একইসঙ্গে ব্যাঙ্ক থেকে নোট বদলালে আঙুলে কালি লাগানোর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ট্যুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত কালা কৌশল। এর মানে, এই সরকার সাধারণ মানুষকে বিশ্বাস করছে না। তৃণমূল নেত্রী আরও বলেছেন, আগামী ১৯ নভেম্বর উপ নির্বাচন। তাঁর প্রশ্ন, তার আগে ভোটারদের আঙুলে কালি লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে কী বলছে নির্বাচন কমিশন? বারবার ব্যাঙ্কের টাকা বদলের লাইনে? এবার থেকে আঙুলে কালি উল্লেখ্য, এদিন কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব শশীকান্ত দাস বলেছেন, একই লোক বারবার ঘুরে ফিরে আসছে। তাই ব্যাঙ্কে এত ভিড় জমছে। তাই এই সব গ্রাহকদের চিহ্নিত করতে টাকা বদল করতে যাঁরা ব্যাঙ্কে আসবেন, তাঁদের আঙুলে মোছা শক্ত, এমন কালি লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আজ থেকেই শুরু হয়েছে এই প্রক্রিয়া। মমতার কটাক্ষ, এবার মানুষের হাতের কালি সরকারের মুখে পড়বে। এছাডাও নোট বাতিল ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগও এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ট্যুইটারে বলেছেন, রেলওয়ে, পেট্রোল পাম্পগুলি পুরানো নোট নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের কৃষি, সমবায় ক্ষেত্রে কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি। রোগীদের বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সি হোম বা বিনা প্রেসক্রিপশনে ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। মানুষ দুর্ভোগের শিকার।