একের বিরুদ্ধে এক ফর্মুলা নিয়ে সনিয়ার কাছে মমতা, কথা ‘বিজেপি-বিদ্রোহী’-দের সঙ্গেও
নয়াদিল্লি ও কলকাতা: বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেসকেও পাশে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে সাক্ষাতে ফের ‘একের বিরুদ্ধে এক ফর্মুলা’র সওয়াল। এর আগে বিজেপির বিদ্রোহীদের সঙ্গেও বৈঠকে বসেন তৃণমূলনেত্রী। এদিন ১০ জনপথে বৈঠক হয় সনিয়া গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে। বৈঠকের পর মমতার গলায় উঠে এল পুরনো সম্পর্কের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, সনিয়া সিনিয়র পলিটিসিয়ান। আমি যখনই দিল্লিতে আসি তখনই দেখা করি। রাজীবের সময় থেকে ভাল সম্পর্ক। এখনও আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। আমি শরীর নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। পলিটিক্স নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দিল্লি সফরে গিয়ে একের পর এক আঞ্চলিক দলের সঙ্গে মমতার বৈঠকের পর রাজনৈতিক মহলে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল, মমতা কি কংগ্রেসকে ছাড়া আঞ্চলিক জোটের পক্ষপাতী, না কি কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর মোদী বিরোধী জোটের? সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর এ প্রসঙ্গে অবস্থান কিছুটা হলেও খোলসা করলেন মমতা। তৃণমূলনেত্রী বললেন, আমরা বিভিন্ন আঞ্চলিক দল একসঙ্গে কাজ করছি। আমরা চাই কংগ্রেসও থাকুক। যেখানে যে শক্তিশালী সে লড়ুক। একের বিরুদ্ধে এক লড়াই হওয়াটা খুব জরুরি। একের বিরুদ্ধে এক লড়াই হলে বিজেপির যাওয়া নিশ্চিত। ওরা প্রতিহিংসার রাজনীতি ছাড়া আর কোনও কাজ মানুষের জন্য করছে না। মোদীকে হঠাতে একের বিরুদ্ধে একের লড়াইয়ের পক্ষে সওয়াল করছেন মমতা। এপ্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সমীকরণ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূলনেত্রী সাফ জানিয়ে দেন, যা বলার বলে দেওয়া হয়েছে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কর্ণাটকে কংগ্রেস দেবগৌড়ার জেডিএসের জোট না করায়, মঙ্গলবার কার্যত অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মমতা। কিন্তু, বুধবার সেই মমতাই বললেন, তিনি চান কর্ণাটকে কংগ্রেস জিতুক। ইউপিএ বনাম সম্ভাব্য ফেডারেল ফ্রন্টের সংঘাতের জল্পনায় ইতি টানার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে যাঁরা আছে থাকুক। পওয়ার আছে, লালু আছে। কর্ণাটকে কংগ্রেস শক্তিশালী। ওরা সরকারে আছে। ওরা লড়াই করছে। আমি চাই কংগ্রেস জিতুক। শুধু বিজেপি বিরোধীদের সঙ্গেই নয়, বিজেপির অন্দরে মোদী বিরোধী বলে পরিচিত অরুণ শৌরী, যশবন্ত সিনহা এবং শত্রুঘ্ন সিনহার সঙ্গেও দেখা করেন মমতা। বিজেপি অবশ্য মমতার এই দিল্লি-তৎপরতাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, বাতিল খেলোয়াড়দের নিয়ে থার্ড ফ্রন্ট গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। মমতাকে কেউ কেউ গ্যাস খাইয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে। বাংলা ছেড়ে দিল্লিতে পড়ে রয়েছেন, দিল্লিও পাবেন না, বাংলাও যাবে। এদিন অখিলেশ যাদবের সঙ্গে ফোনে প্রায় ১০ মিনিট কথা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সূত্রের খবর, আলোচনা হয়েছে ফেডারেল ফ্রন্ট নিয়ে।