শ্রীনগর:  কয়েকদিন যাবৎ উপত্যকায় মহিলাদের চুল কেটে নেওয়া নিয়ে এক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রাতে সন্দেহভাজন এমন এক ব্যক্তিকে পাথর ছুঁড়ে মেরে হত্যা করা হল কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায়। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, আব্দুল সালাম ওয়ানি নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধকে অন্ততনাগ জেলার দাঁতের গ্রামে পাথর ছুঁড়ে মেরে হত্যা করা হয়েছে। সেই সময় তিনি রাতের প্রার্থনা সেরে মসজিদ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। আক্রমণের পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় আক্রান্ত বৃদ্ধের।


প্রসঙ্গত, যে তরুণ ওই বৃদ্ধকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে, তার ধারণা হয় ওই ব্যক্তিই রাতের অন্ধকারে বেরিয়ে মহিলাদের চুল কেটে দিচ্ছেন। এই ঘটনা প্রসঙ্গে অনন্তনাগ পুলিশকে জিজ্ঞেস করা হলে, তাদের তরফে দাবি করা হয় এমন কোনও ঘটনার খবর তাদের কাছে নেই। এমনকি তাদের কাছে এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কেউ কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি বলেও জানায় অন্ততনাগ থানার পুলিশ।

এই ঘটনার পর কেউ পুলিশ জানায়নি কেন জিজ্ঞেস করায় স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, এটা দুর্ঘটনাবশত ঘটে গিয়েছে। তাই কেউ পুলিশে অভিযোগ জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি।

প্রসঙ্গত দিন কয়েক ধরেই উপত্যকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে, কোনও এক ব্যক্তি রাতের অন্ধকারে বেরিয়ে মহিলাদের চুল কেটে নিচ্ছে। তারপর থেকেই সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা সেই দল বা ব্যক্তির সন্ধানে রয়েছে, যারা মহিলাদের চুল কেটে নিচ্ছে। সন্দেহের জেরে স্থানীয় লোকজন বহু নির্দোষ মানুষকেও পিটিয়ে দিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এরফলে গোটা উপত্যকা জুড়ে এক আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সম্প্রতি সন্দেহবশত সেখানকার উন্মত্ত জনতা এক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে ধরে যিনি মহিলাদের মতো পোশাক পরে ঘুরছিলেন। তাঁকে ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ওই আক্রান্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। ওই একই কারণে সন্দেহবশত আরও দুজন ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করে নিশাত এলাকায়। এরপর থেকেই এলাকায় নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, কোনওরকমের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে।

শুধু অন্তনাগেই নয়, বারামুলা জেলার দেলিনা এলাকায় শুধুমাত্র সন্দেহের বশে একটি বাচ্চা ছেলেকে মারাত্মক পেটানো হয় এই সপ্তাহের শুরুতে। পরে জানা যায় ওই নাবালক সেখানে তার এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। তবে শুধু ছেলেরা নয়, চুল কেটে নিচ্ছে মহিলারা, এমন সন্দেহ প্রকাশ করে এক বিয়ে বাড়িতে আসা দুই মহিলাকেও সম্প্রতি বেধড়ক মারধর করা হয়। এই ঘটনাটি ঘটেছে বাবা ডেম্ব এলাকায়।