লখনউ: সব ঠিকঠাক থাকলে সম্ভবত টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মনোজ সিংহ উত্তরপ্রদেশের আগামী মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের তিনিই প্রথম পছন্দ। আগামীকাল লখনউয়ে দলীয় বিধায়কদের বৈঠকের পর হবে চূড়ান্ত ঘোষণা। প্রতিবেশী রাজ্য উত্তরাখণ্ডে সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখা যাবে বিজেপির জাতীয় সচিব ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়াতকে।


টেলিকম মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি মনোজ সিংহ রেলমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীও। গোবলয়ের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে তাঁকে চূড়ান্ত প্রশাসনিক পদ দিয়ে মোদী-শাহ জুটি সম্ভবত বোঝাতে চাইছেন, জাতপাত বা অন্য সমীকরণের চাইতে দক্ষতা তাঁদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেনারস আইআইটি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা ৩বারের সাংসদ মনোজ বেশ খানিকটা লো প্রোফাইল রেখে চলেন। তবে তাঁর দক্ষতা সম্পর্কে কারও মনে প্রশ্ন নেই। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, টেলিকম মন্ত্রকের জন্য কর্পোরেট কর্তাদের সঙ্গে তাঁর যেমন ওঠাবসা রয়েছে, তেমনই তিনি স্বচ্ছন্দ রেলওয়ের শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে। এক সময় বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতিও ছিলেন তিনি।

প্রথমে মনে করা হচ্ছিল, মনোজ সিংহর জাত তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ তিনি ভূমিহার সম্প্রদায়ের মানুষ, পূর্ব উত্তরপ্রদেশের কিছু জেলা ছাড়া ও রাজ্যে ভূমিহারদের বিশেষ অস্তিত্ব নেই। কিন্তু মোদী-শাহ জুটি যেভাবে জাতপাতকে গুরুত্ব না দিয়ে দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী করেছেন বা গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী করেছেন বিজয় রূপানিকে, সেই একইভাবে মনোজকে তাঁরা উত্তরপ্রদেশের মত জাতপাত বিদীর্ণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করতে চান। কোনও উঁচুজাতের মানুষ উত্তর ভারতের কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না বলে যে রাজনৈতিক মিথ প্রচলিত ছিল, এই পদক্ষেপে সেই ধারণাও ভেঙে ফেলতে চান তাঁরা।

আরও একটি বিষয় মনোজের পক্ষে গিয়েছে। তিনি যেমন মোদী-শাহর আস্থাভাজন, তেমনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহেরও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। প্রথমে মনে করা হচ্ছিল, রাজনাথই উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব পাবেন, ১০০ বিধায়কের সমর্থনও ছিল তাঁর দিকে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী মনে করছেন, রাজনাথের যা অভিজ্ঞতা ও সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে যেমন গ্রহণযোগ্যতা, তা লখনউয়ের থেকে দিল্লির বেশি উপযোগী। বিশেষ করে মনোহর পর্রীকরের ইস্তফার ফলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এখন ফাঁকা, বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ অসুস্থ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির বিরোধীদের সঙ্গে সম্পর্ক তেমন ভাল নয়। তাই মোদীর এমন কাউকে দরকার, যিনি তাঁর যাবতীয় অভিজ্ঞতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পাশাপাশি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্মও সামলাতে পারবেন।