বস্তার:  মাও অধ্যুষিৎ এলাকা হিসেবে পরিচিত ছত্তীসগড়ের বস্তার পেল তার প্রথম মহিলা সিআরপিএফ অফিসারকে। ঊষা কিরণ, ২৭ বছর বয়সি এই সিআরপিএফ অফিসার হলেন প্রথম সিআরপিএফ মহিলা আধিকারিক যিনি এই প্রথম ছত্তীসগড়ের বস্তারের মতো আদিবাসী প্রধান মাও উপদ্রুত এলাকায় পোস্টিং পেলেন। সেখানকার এক সিআরপিএফ আধিকারিকের মতে, ঊষা কিরণের এই এলাকায় পোস্টিং শুধুমাত্র সেখানকার গ্রামের আদিবাসী মহিলাদের নিরাপত্তার দিক থেকে বাড়তি প্রাপ্তি নয়, গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর যোগসূত্র হিসেবে কাজ করবেন এই মহিলা সিআরপিএফ আধিকারিক। প্রসঙ্গত, এই অঞ্চলে সিআরপিএফ জওয়ানদের সম্পর্কে মানুষের মনে যে ভীতি তৈরি হয়েছে, হয়তো সেটাও কিছুটা কমবে।


আদিবাসী ওই অঞ্চলে বহু সময়ই মাওবাদীদের খোঁজে এসে সেখানকার মহিলাদের ওপর যৌন নিগ্রহ করে যায় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানেরা।

প্রসঙ্গত, মাত্র দুদিন আগেই ছত্তীসগড়ের এই অঞ্চলে বেআইনি কাজের জন্যে খবরের শিরোনামে এসেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সম্প্রতি এক রিপোর্ট জমা দেয়, যেখানে তারা দাবি করে, তাদের হাতে নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষদের ওপর নির্যাতন চালানোর সবধরনের প্রমাণ আছে। ২০১৫-র অক্টোবারে বস্তারে এক তল্লাশি অভিযান চালাতে এসে ১৬ জন আদিবাসী মহিলাদের ধর্ষণ করা হয়। পাঁচ দিনের সেই অপারেশন যৌথভাবে সিআরপিএফ জওয়ান এবং রাজ্য পুলিশ চালিয়ে ছিল।

তবে এরপর হয়তো কিছুটা পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে, আশা বস্তারের দারভা অঞ্চলের এক বাসিন্দার। তিনি মনে করেন, সিআরপিএফ-এর ৮০ নম্বর ব্যাটেলিয়নের অ্যাসিসট্যান্ট কম্যান্ডান্ট ঊষা কিরণ আসার ফলে কিছুটা স্বস্তি পাবে সেখানকার আদিবাসী মহিলারা।

প্রাক্তন জাতীয় ক্রীড়াবিদ ঊষা ট্রিপল জাম্পে এর আগে তিনবার দিল্লির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বস্তারে পোস্টিং প্রসঙ্গে ঊষা জানিয়েছেন, সিআরপিএফ-এ প্রশিক্ষণ পর্ব শেষের পর তার সামনে তিনটি জায়গার নাম রাখা হয়েছিল। কিন্তু তিনিই সেখান থেকে মাও অধ্যুষিৎ বস্তার বেছে নেন। কারণ ঊষার কথায় আদিবাসীরা সরল হয়, তাদের সঙ্গে কাজ করতে ভাল লাগে। কিন্তু পিছিয়ে পড়া মানুষ এখানে থাকায় এই এলাকার তেমন উন্নতি হয়নি। আর তারই সুযোগ নিয়েছে মাওবাদীরা। এই এলাকার উন্নয়নই তাঁর অন্যতম লক্ষ্য।