নয়াদিল্লি: ২০১১-য় আন্না হাজারের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের উত্তাল দিনে যোগগুরু রামদেবকে ঠান্ডা রাখতে দিল্লি বিমানবন্দরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন তিনি ও তৎকালীন ইউপিএ সরকারের আরও এক মন্ত্রী কপিল সিবাল। ৬ বছর পর প্রণব মুখোপাধ্যায় স্বীকার করে নিলেন, সেই সিদ্ধান্তে তাঁদের ভুল ছিল।


প্রণব বলেছেন, আন্না হাজারের উপবাস অবস্থানে এমনিতেই বেকায়দায় ছিল ক্ষমতাসীন কংগ্রেস। তাই রামদেবও কালো টাকা দেশে ফেরানোর দাবিতে অনশনে বসার ঘোষণা করায় সেই আন্দোলন অঙ্কুরেই শেষ করে দিতে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব। রামদেবের ঘনিষ্ঠ কারও সঙ্গে তাঁর কথা হয়, তিনি বলেন, রামলীলা ময়দানে অনশনে বসার আগে যোগগুরুর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে আন্দোলন শুরু না করার অনুরোধ করতে। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের বরিষ্ঠ মন্ত্রী হিসেবে তিনি যোগগুরুর সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, তিনি ভাল হিন্দি জানতেন না, তাই রামদেবের সঙ্গে কথা বলার জন্য সঙ্গে নিয়েছিলেন তৎকালীন মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী কপিল সিবালকে। কিন্তু পরে দেখেন, সেই বৈঠকে কিছু লাভ হয়নি, তাঁদের হিসেবের ভুল হয়েছিল। ওই সাক্ষাৎ করা তাঁদের উচিত হয়নি। স্বীকার করতে অসুবিধে নেই, ভুল করেছিলেন তাঁরা।

১ জুনের সেই আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় রামদেব ৪ তারিখ অনশনে বসেন রামলীলা ময়দানে। মাঝরাতে নিরাপত্তা বাহিনী এসে আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে তুলে দেয়। তাতে মৃত্যু হয় এক মহিলার। রামদেবকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় হরিদ্বারে, সেখানে অনশনে বসেন তিনি।

গোটা ঘটনায় জনগণের চোখে ভিলেন প্রতিপন্ন হয় ইউপিএ। প্রণব বলেছেন, আন্না হাজারের দাবি ছিল, তিনি লোকপাল বিলের খসড়া বানিয়েছেন, সংসদে সেটাই পাশ করাতে হবে। সেটা সম্ভব ছিল না। কিন্তু ওই আন্দোলনের ফলে বোঝা গেল, মানুষ জাগছে। তারা আর শুধু প্রতিনিধি নির্বাচন করে খুশি নয়, শাসন ব্যবস্থায় সরাসরি যোগ দিতে চায়। সেই জাগ্রত জনসত্ত্বার সঙ্গে প্রথমবার তাঁদেরই মুখোমুখি হতে হয়েছিল বলে প্রণব মন্তব্য করেছেন।